বিজেপির ফেক নেটওয়ার্ক বন্ধ করেনি ফেসবুক: বিস্ফোরক সোফি

‘ভারতের গত বছরের নির্বাচনে বিজেপিসহ কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি ও ভারতীয় জনতা পার্টি; সবার আইটি সেলই ফেক অ্যাকাউন্টের নেটওয়ার্ক চালাচ্ছিল। এদের প্রায় সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিয়েছিল ফেসবুক। তবে বিজেপির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন ফেসবুকের সাবেক কর্মকর্তা ও হুইসেল ব্লোয়ার সোফি ঝ্যাং। বিজেপির ফেক অ্যাকাউন্টগুলোর প্রতি এক ধরনের পক্ষপাত দেখানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ তার।

সোফি আরও বলেন, বিজেপির লোকসভার এক সাংসদ ৫০-৬০টা ফেক অ্যাকাউন্টের একটি নেটওয়ার্ক চালাচ্ছিলেন। সেটা নিয়ে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বারবার রিপোর্টও করেছিলেন। তারপরও নেটওয়ার্কটি সরানো হয়নি।

ফেক অ্যাকাউন্টের নেটওয়ার্কগুলো সাধারণত একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির প্রচারে তৈরি হয়। অ্যাকাউন্টগুলো লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করে প্রচার চালায়। বিপুল ‘রিচ’ তৈরি করে মানুষের মনে প্রভাব ফেলাই এর লক্ষ্য।

সোফি জানালেন, ‘২০১৯ সালের দিকেই ফেক নেটওয়ার্কগুলো ধরা পড়ে। তিনটি নেটওয়ার্ক আমরা সরিয়ে ফেলি। চার নম্বরটিতে এসেই সব থমকে যায়। দেখা যায় ওই নেটওয়ার্কের নেপথ্যে রয়েছে বিজেপির এক বড় মাপের নেতা। পরে পঞ্চম নেটওয়ার্ক সরাই আমরা, কিন্তু চার নম্বরটি অক্ষত থেকে যায়। বারবার রিপোর্ট করার পরও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ছিল নিরব।’

হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সোফি ঝ্যাং বলেন, ‘ভারতের নাগরিকদের যদি তাদের কথা শোনাতে হয় তবে সরব হতে হবে। যদি তারা মনে করে যে কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ করতে হবে। শক্তিশালী ও অভিজাতদের জন্য এক নিয়ম এবং বাকিদের জন্য আরেক নিয়ম, এভাবে গণতন্ত্র চলতে পারে না।’

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের এক পার্লামেন্টারি কমিটিতে সোফি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের কাজে ফেসবুক ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন ফেসবুককে জবাবদিহিতার কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে কিনা সেটা ভারতের ব্যাপার।’

প্রায় ৩৩ কোটি ব্যবহারকারীর দেশ হওয়ায় ভারতকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ একটু সমীহ করে চলে বলা যায়। এ নিয়ে গত বছরের আগস্টে ওয়ালস্ট্রিট জার্নালেও একটি প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছিল। ওই সময় বিজেপির বিভিন্ন পেজে আপত্তিকর কথাবার্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় খোদ ফেসবুকের কর্মীরাই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।

 

সূত্র: এনডিটিভি