নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু যুদ্ধাপরাধী!



ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের এক অনন্য ব্যক্তিত্ব নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। পরপর দুইবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া এই ব্যক্তিকেই ‘যুদ্ধাপরাধী’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু! তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এটলিকে লেখা চিঠিতে নাকি এমনটাই লিখেছিলেন তিনি।

noname

এই নথি সামনে আসতেই ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কংগ্রেসের দাবি চিঠিটি জাল! আর চিঠিতে নেহরুর কোনও স্বাক্ষরও নেই।

নতুন করে প্রশ্ন উঠছে, তাইপেতে বিমান দুর্ঘটনাতেই কী নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল? ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্টের পরও কী জীবিত ছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু?

বিমান দুর্ঘটনায় সুভাষচন্দ্রের মৃত্যু হয়েছে এমনটা সম্ভবত বিশ্বাস করতে পারেননি নেহরু। আর তাই চিঠি লিখেছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লেমেন্স এটলিকে। এতে নেহরু লিখছেন, বিশ্বস্ত সূত্রে তিনি জানতে পেরেছেন, এটলির চোখে যুদ্ধাপরাধী সুভাষ চন্দ্র বসুকে রাশিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন স্ট্যালিন। আর এ চিঠি সামনে আসতেই উঠছে একের পর এক প্রশ্ন?

প্রশ্ন ১. সহযোদ্ধা সুভাষচন্দ্র বসুকে কেন'যুদ্ধাপরাধী' বলে উল্লেখ করলেন নেহরু?

প্রশ্ন ২. কেনই বা তিনি এ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বললেন এটলিকে?

প্রশ্ন ৩. আগস্টে বিমান দুর্ঘটনার খবর জানার পরও ডিসেম্বরে নেতাজিকে নিয়ে এ চিঠি লেখার অর্থ কী?

প্রশ্ন ৪. তাহলে কী নেহরু বিশ্বাস করতেন নেতাজি বেঁচে আছেন?

নেহরুর এই চিঠি ইস্যুতে এখন সরগরম ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন। নেহরুর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। আর কংগ্রেসের দাবি পুরো চিঠিটাই বানোয়াট। পুরোটই বিজেপির নোংরা ষড়যন্ত্র। নিজেদের দাবির স্বপক্ষে চিঠিতে জওহরলাল নেহরুর কোনও স্বাক্ষর না থাকার বিষয়টিকেই সামনে তুলে আনতে চাইছে কংগ্রেস।

নেতাজি’র অন্তর্ধানের ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিশন তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট তাইওয়ানের তাইপেতে এক বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজি মারা যান। কিন্তু তৃতীয় আরেকটি তদন্ত কমিশন ও অনেকে যাদের মধ্যে নেতাজির বেশ কয়েকজন আত্মীয়ও রয়েছেন তারা বিমান দুর্ঘটনার তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ করেন।

চন্দ্র বসু নামে নেতাজির এক নাতি বলেন, “ওই বিমান দুর্ঘটনার তত্ত্ব আমি বিশ্বাস করি না। আজ আমরা হয়তো সব উত্তর পাবো না, কিন্তু কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।”

জার্মানিতে বসবাসকারী নেতাজির কন্যা অনিতা বসু অবশ্য বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি বিশ্বাস করেন তার বাবা বিমান দুর্ঘটনাতেই মারা গেছেন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

/এমপি/