ভারতের বড় শহরে ছড়াচ্ছে ওমিক্রন, হাসপাতালে ভর্তি কম

ভারতের দিল্লি, মুম্বাই ও কলকাতার মতো বৃহত্তম শহরগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। তবে আক্রান্তের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে না। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে গ্রামীণ এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালগুলোতে চাপ বাড়তে পারে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভারতে নতুন শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৯০ হাজার ৯২৮ জন। বছরের শুরুর তুলনায় এটি প্রায় চারগুণ। এসব আক্রান্তের বেশিরভাগ শহরগুলোতেই। কর্মকর্তারা বলছেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে স্থান দখল করছে ওমিক্রন। নতুন আক্রান্তদের শুধু যে মৃদু উপসর্গ আছে তা নয়, বাড়িতেই দ্রুত সেরে উঠছেন তারা।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা, চেন্নাই ও বেঙ্গালুরু অঞ্চলের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে চিহ্নিত করেছে। যদিও রাজ্যের কর্মকর্তা উদ্বিগ্ন দেশজুড়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থা দুর্বল থাকায় করোনা দ্রুত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে কয়েকদিন আগেও নতুন শনাক্তের অর্ধেক দেড় কোটি জনসংখ্যার শহর কলকাতায়। এখন প্রতিবেশী জেলাগুলোতেও বাড়ছে সংক্রমণ। এই রাজ্যে ভারতের মধ্যে সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ।

সংক্রমিত হয়ে বাড়িতে আইসোলেশনে থাকা পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য সেবার প্রধান অজয় চক্রবর্ত্তী বলেন, জেলা ও গ্রামীণ অঞ্চলগুলোর পরিস্থিতিতে আমরা নজর রাখছি। শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে।

তিনি জানান, কলকাতার কোভিড বেড অনেকটাই খালি। রাষ্ট্রীয় পরিচালিত বালিয়াঘাটা জেনারেল হাসপাতালে মঙ্গলবার মাত্র ৭৫ জন ভর্তি হয়েছেন। অথচ শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার।

মুম্বাইয়ে বুধবার নতুন শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে। এদিন শনাক্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ১৬৬। গত বছর সর্বোচ্চ শনাক্ত ছিল ১১ হাজারের কিছু বেশি। নতুন আক্রান্তদের ৯০ শতাংশের কোনও উপসর্গ নেই এবং মাত্র ৮ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে রাজ্যের স্বাস্থ্য বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে।

দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বুধবার শনাক্তের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৬৬৫ জন। কিন্তু রাজ্যের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাত্র ৭ শতাংশ কোভিড বেডে রোগী আছেন।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অবশ্য সতর্কতা অবলম্বন করার কথা জানিয়ে বলছেন, এমনকি মৃদু আক্রান্ত হলেও দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে চাপে ফেলতে পারে।

ভারতে ওমিক্রনে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে অন্তত ২ হাজার ১৩৫টি। এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়া একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তিনি ডায়বেটিসে আক্রান্ত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার ভারতে করোনায় ৩২৫জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। ফলে মহামারিতে ভারতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৭৬ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিন কোটি ছাড়িয়ে গেছে।