তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি পিকের!

ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর ও তার সংস্থা আইপ্যাকের সঙ্গে সম্পর্কের কী ইতি ঘটতে চলেছে তৃণমুলের! সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি মেসেজ ঘিরে সেই জল্পনা শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে।

সূত্রের খবর, সম্প্রতি রাজ্যের ১০৭টি পৌরসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকার ঘোষণা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে সংকট দেখা দিয়েছিল। তারপর থেকেই তৃণমূল ও আইপ্যাকের সম্পর্ক আরও অবনতি হয়েছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনটাও শোনা যাচ্ছে।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, তিন দিন আগে ভোটকুশলী তথা আইপ্যাকের কর্ণধার প্রশান্ত কিশোর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি মেসেজ পাঠান। এতে তিনি জানিয়ে দেন পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে আইপ্যাক তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করতে চায় না। উত্তরে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলেন মমতা।

এই মেসেজকে কেন্দ্র করেই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্যের রাজনীতিতে। তাহলে কী আইপ্যাকের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করতে চলেছে তৃণমূল? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উত্তর কী সেই ইঙ্গিতই বহন করছে? এমনটাই প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহল। যদিও আইপ্যাকের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ হচ্ছে কিনা, সেটি নিয়ে তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তারা বলেছেন, ‘এ নিয়ে কিছু জানি না।’

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থানে তৃণমূল ১৬টি আসন হারায়। তারপরেই ভোট কুশলী হিসেবে পরিচিত প্রশান্ত কিশোরের দ্বারস্থ হয় দলটি। ওই বছর থেকেই তৃণমূলের রণনীতি পরিকল্পনা ও পরিচালনার ভার নেয় আইপ্যাক।

তখন বিভিন্ন বিরোধী দলের বিধায়করা অভিযোগ করেছিলেন, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য আইপ্যাক তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। একুশের বিধানসভা ভোটের সময় আইপ্যাক আর তৃণমূলের সখ্যতা চূড়ান্ত উচ্চতা পৌঁছায়।

এই সময় আইপ্যাকের কাজের পদ্ধতি নিয়ে তৃণমূলের আদি নেতারা মমতার কাছে অভিযোগ করেছিলেন। যদিও তখন এই অভিযোগকে গুরুত্ব দেয়নি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ফের কলকাতা পৌর ভোটের সময়ও প্রার্থী বাছাই নিয়েও আইপ্যাকের বিরুদ্ধে সরব হয় দলের একাংশ। এবার ১০৭টি পৌরসভায় প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায়। জেলার নেতারা অভিযোগ করেন, প্রার্থী বাছাইয়ে তাদের তালিকা মানেনি আইপ্যাক।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়ে ফিরহাদ হাকিম অভিযোগ করেন, ‘কেউ আইডি-পাসওয়ার্ড নিয়ে এই কাজ করেছেন।’ আইপ্যাকের তরফে জানানো হয়, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তির সঙ্গে তারা কোনওভাবেই জড়িত নয়।

এই বির্তক চলার মাঝেই সামনে এসেছে মেসেজ নিয়ে জল্পনা। এই মেসেজ যদি সত্যি হয়, তাহলে তৃণমূলের সঙ্গে পাকাপাকিভাবে আইপ্যাকের সর্ম্পকছেদ এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।