কয়লার দাম বৃদ্ধি, ভারতে বিদ্যুৎ সংকটের আশঙ্কা

করোনা মহামারি কাটিয়ে ওঠার পর ভারতে এখন বিদ্যুতের চাহিদা ঊর্ধ্বমূখী। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে কয়লা সংকট। ইউক্রেনে যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম বাড়ছে। এর প্রভাব টের পেতে শুরু করেছে ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে দেশটি ব্যাপক বিদুৎ সংকটের মুখে পড়তে চলেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ছয় মাসে কয়লার জোগানের অভাব থাকায় ভারতের আমদানি নির্ভরশীলতা বেড়েছে। ফলে যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে ব্যাপক হারে। ইন্ডিয়া এনার্জি এক্সচেঞ্জ মার্কেটে এক ইউনিটের (কিলোওয়াট/ঘণ্টা) গড় দাম (অ্যাভারেজ ক্লিয়ারিং প্রাইজ) চলতি বছরের মার্চের শুরুতে ছিল ৩ রুপি ৮৬ পয়সা, তা এখন বেড়ে হয়েছে ১৩ রুপি। আশঙ্কা করা হচ্ছে, কয়লার দাম বৃদ্ধির ফলে ভারতে ২০২৩ সালে বিদুৎতের দাম ৪ শতাংশ বাড়বে।

জানা যাচ্ছে, যুদ্ধের কারণে রাশিয়া থেকে কয়লা আনতে সমস্যায় পড়ছে ভারত। অন্যদেশ থেকে কয়লা এনে ভারতের চাহিদা পুরোপুরি পূরণ করা যায়নি। রেটিং সংস্থা আইসিআরএ বলছে, আমদানিকৃত কয়লার দাম ২০২৩ অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে ৪৫ থেকে ৫৫ শতাংশ বাড়বে। সংস্থাটি আরও বলেছে, ঘাটতি মেটাতে আগামী অর্থবছরে কোল ইন্ডিয়াকে কয়লা উৎপাদন বাড়িয়ে ৭০০ মেট্রিক টন করতে হবে, যা ২০২১ অর্থবছরে ছিল ৬০১ মেট্রিক টন।

এদিকে, অস্ট্রেলিয়ায় কয়লার দাম মার্চে রেকর্ড স্পর্শ করে। ভারতের জন্য তা খুবই খারাপ খবর। কারণ, রাশিয়ার পর অস্ট্রেলিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া ভারতের কয়লা আমদানির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভারত শুধু যে আমদানিকৃত কয়লার দামের চাপ রয়েছে তাই নয়, দেশের কয়লার দামও বেড়েছে। কোল ইন্ডিয়ার ই-অকশনে সেই চিত্র দেখা গেছে। কোল ইন্ডিয়ার স্থির করে দেওয়া বেসলাইন প্রাইজ সর্বকালীন রেকর্ড ভেঙেছে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে। বেসলাইন প্রাইজ ২৭০ শতাংশ বেশি হয়ে যায়। যা আরও বাড়তে থাকে, এবং মার্চে হয়েছে ৩০০ শতাংশ বেশি। ভারতের বেশিরভাগ বিদুৎ কেন্দ্র কয়লা নির্ভর। এর ফলে কয়লার উপযুক্ত যোগান না আসলে বিদুৎ কেন্দ্রগুলো সংকটে পড়বে। অপর দিকে, কয়লার দাম বাড়ার কারণে বিদুৎতের উৎপাদর খরচ বেড়ে যাবে। বিদুৎতের দাম বৃদ্ধির সম্ভবনা প্রবল মনেই করা হচ্ছে।