বিকল বাংলাদেশগামী জাহাজ নিয়ে সমস্যায় কলকাতা বন্দর

এক মাস পেরিয়ে গেলেও কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর থেকে বিকল বাংলাদেশগামী জাহাজ এমভি মেরিন ট্রাস্ট-১ মেরামতের কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না জাহাজটির মালিক।‌ জাহাজটি ৫ নম্বর বার্থ আটকে রাখায় বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিদিন ৪০ লাখ রুপি ক্ষতি হচ্ছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশি জাহাজটির ১৫ জন নাবিকের মেরিন ক্লাবে থাকা খাওয়ার দায়িত্ব পালন করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গত ২৪ মার্চ এম.ভি.মেরিন ট্রাস্ট-০১ নেতাজি সুভাষ ডকের ৫ নম্বর বার্থ থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, জাহাজটির কর্মীরা অপরিকল্পিতভাবে পণ্য বোঝাই করার ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।

কন্টেইনারসহ জাহাজের একাংশ পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে মেরিন বিভাগের একাংশের। এই অবস্থায় খিদিরপুর ডকের ৫ নাম্বার বার্থের বড় অংশ জুড়ে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানির একটা বড় অংশ ঘিরে দেওয়া হয়েছে অয়েল স্পিল বুম ব্যারিয়ার দিয়ে ৷ ডুবে থাকা ভেসেলের চারিদিকে নজর রাখা হচ্ছে যাতে কোনও ভাবেই রাসায়নিক ছড়িয়ে না পড়ে। এ ছাড়া বার্থে রাখা হয়েছে পাম্প, তেল বা রাসায়নিক শুষে নেওয়ার প্যাড। যদি কোনোভাবে দেখা যায় জাহাজ থেকে রাসায়নিক ছড়িয়ে পড়ছে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে এগুলোকে কাজে লাগানো হবে। এ ছাড়া সমীক্ষা চালানো ও রেসকিউ অপারেশনের জন্যে বিশেষ দল রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশের এই জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু যে জাহাজটি নেতাজি সুভাষ ডক থেকে যাত্রা করার পরিকল্পনা করেছিল, তা হঠাৎ ১৫ মিনিটের মধ্যে কেন ডুবে গেলো, তার তদন্ত চলছে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ১৮টি ২০ ফুট কন্টেইনার সরাসরি পানিতে চলে গেছে এবং ১০টি ৪০ ফুট কন্টেইনার পানির উপরিভাগে ভাসছে, যা দড়ি দিয়ে বেঁধে সুরক্ষিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং পণ্যবাহী জাহাজের  ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যাত্রী বা পণ্য টার্মিনাল অপারেটর, স্যালভেজ অপারেটর এবং বিমা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা  হচ্ছে।

ইতোমধ্যে কন্টেইনারের অবস্থান জানতে ডুবুরি নামিয়ে দেখা হয়েছে। ডুবে যাওয়া জাহাজটি আপাতত ঘেরাটোপে বন্দি। জাহাজের নাবিকসহ বেশ কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষ কথা বলেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের চিন্তা বাড়িয়েছে স্রোতের টানে কন্টেইনার যেন অন্য কোনও দিকে ভেসে না যায়। তাহলে বাকি জাহাজ চলাচলে সমস্যা তৈরি হবে।