কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ চাইবেন বিজেপি প্রধান

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অবস্থান শক্তিশালী করতে কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ নেবেন ভারতের ক্ষমতাসীন দলটির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রসাদ (জেপি) নাড্ডা। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতার বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর এই প্রথম বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা এধরণের বৈঠক করতে চলেছেন।

বৃহস্পতিবার দিল্লি ফিরে যাওয়ার আগে জেপি নাড্ডা বিকাল ৪টায় কলামন্দির হলে কলকাতার বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। দেড় ঘণ্টার এই বৈঠকের দায়িত্বে রয়েছেন রাজ্য যুবমোর্চার সভাপতি ইন্দ্রনীল খান, বিজেপি নেতা তথা অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ ও অধ্যাপক অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় বিজেপি ঘনিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমন্ত্রিতদের কাছে অনুষ্ঠানের জন্য রেজিষ্ট্রেশন করার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে জানতে চাওয়া হয়েছে নাড্ডাকে তিনি কি প্রশ্ন করতে চান।

সূত্রের খবর, একুশের বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির সমর্থনে পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবীদের একাংশের উচ্ছ্বাস থাকলেও এখন কতটা আছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এই বৈঠকে কতজন যোগ দেবেন তা নিয়ে সংশয়ে আছেন উদ্যোক্তরা। যদিও বলা হচ্ছে, এই বৈঠকটি সর্বসাধরণের জন্য উন্মুক্ত।

এমনিতেই একুশের বিধানসভা ভোটের পর থেকে একের পর এক ভোটে হার, দলের অভ্যন্তরের গোষ্ঠী কোন্দল পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে যেমন দুর্বল করেছে, তেমনই এর প্রভাব বুদ্ধিজীবী মহলেও পড়েছে। এমনটা মানছেন রাজ্য কমিটির এক নেতা। তিনি বলেন, ‘আগের মতো দলের সমর্থনে বিশিষ্ট নাগরিক বা বুদ্ধিজীবীদের দলীয় অনুষ্ঠানে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই মনে করছেন এই মুহূর্তে বিজেপির সঙ্গে প্রকাশ্যে গিয়ে শাসকদলকে চটিয়ে কোনও লাভ নেই। তাই অনেকে শাসকদলের ছত্রছায়ায় ফিরে গেছেন। অনেকে বসে গিয়েছেন। তাই কট্টর গেরুয়া সমর্থক ছাড়া এই বৈঠক সফল হওয়া মুশকিল। আবার এদের মধ্যে কেউ যদি বঙ্গ বিজেপির বর্তমান হাল নিয়ে প্রশ্ন তুলে, রাজ্য নেতৃত্বকে দায়ী করে তাহলে অস্বস্তিতে পড়তে হতে পারে রাজ্য নেতৃত্বকে।’

অন্যদিকে, দিল্লি সূত্রের খবর, জেপি নাড্ডা এই সফরে দলের সর্বস্তরের সঙ্গে বৈঠক করে মূল সমস্যাকে ধরতে চাইছেন। তিনি শুধু রাজ্য নেতাদের কথা শুনে পশ্চিমবঙ্গে  গেরুয়া সংগঠন নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে নিতে নারাজ। তাই জেপি নাড্ডা দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন অথচ গেরুয়া সমর্থক অধ্যাপক, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, আইনজীবীসহ সমাজের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। দলের সর্বস্তর থেকে রির্পোট নিয়ে বাংলা ছেড়ে যাওয়ার আগে বুদ্ধিজীবীদের বক্তব্যের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন জেপি নাড্ডা।

এদিকে, জানা গেছে, সামনের রবিবার বালিগঞ্জের ভারত সেবাশ্রম হলে আদি বিজেপির পক্ষ থেকে সারাদিনের বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় সবকটি জেলা থেকেই আদি বিজেপির নেতারা জড়ো হবেন। তার আগে জেপি নাড্ডার এই বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেন বিজেপির আদি সদস্যরা। তারা বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর এমন সুযোগ ছাড়তে নারাজ।