গুজরাট দাঙ্গা

মোদিকে নির্দোষ ঘোষণার রায় বহাল রাখলো সর্বোচ্চ আদালত

ভারতের গুজরাট রাজ্যে ২০০২ সালে দাঙ্গার ঘটনায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নির্দোষ ঘোষণার রায় বহাল রেখেছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। দাঙ্গার ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত এক তদন্তে গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদিকে নির্দোষ ঘোষণা করা হলে এর বিরুদ্ধে গুজরাটের এক আদালতে আবেদন করা হয়। ২০১৩ সালে সেই আবেদন প্রত্যাখান করা হয়। পরে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়।

তখন ওই আবেদন করেন গুজরাট দাঙ্গায় নিহত কংগ্রেস দলীয় সাবেক আইনপ্রণেতা এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া জাফরি।

২০০২ সালে গুজরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে ভারতের অন্যতম ভয়াবহ দাঙ্গা ধরা হয়ে থাকে। এক ট্রেনে আগুন দেওয়া হলে ৬০ হিন্দু তীর্থযাত্রী নিহত হলে দাঙ্গা শুরু হয়। এতে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। তাদের বেশিরভাগই মুসলমান।

এই দাঙ্গায় ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ রয়েছে দাবি তুলে নতুন তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন স্বামী হারানো জাকিয়া জাফরি। তদন্তকারীরা ‘ষড়যন্ত্রকারীদের’ বাঁচাতে কাজ করছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

ওই মামলায় জাকিয়া জাফরি, তদন্ত দল এবং অন্যদের বিস্তারিত যুক্তি শোনার পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত রায় দেওয়া স্থগিত রাখে।

শুক্রবার (২৪ জুন) দেওয়া সেই রায়ে আদালত মামলার তদন্তকারীদের দায়ের করা ক্লোজার রিপোর্ট গ্রহণ করে ২০১৩ সালের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। আদালত জাফরির আবেদন খারিজ করে বলেছে এটি ‘যোগ্যতা বর্জিত’।

গুজরাট দাঙ্গার সময়ে আহমেদাবাদ শহরের গুলবার্গ সোসাইটি আবাসিক কমপ্লেক্সে প্রখ্যাত মুসলিম রাজনীতিবিদ এহসান জাফরিসহ ৬৮ জনকে হত্যা করা হয়। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা থামাতে কোনও পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ ওঠে। তবে এই অভিযোগ তিনি বরাবর অস্বীকার করে আসছেন।

দাঙ্গার ঘটনাটি প্রথমে তদন্ত করে গুজরাট পুলিশ। পরে ২০০৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই দায়িত্ব বিশেষ তদন্ত দলের (এসআইটি) হাতে তুলে দেয়। ২০১২ সালে এই তদন্তকারীরা তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে।

সেই প্রতিবেদনে বলা হয় দাঙ্গার ঘটনায় মোদির সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গুলবার্গ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাতেও তদন্ত দলটি অন্য ৬৩ জনের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পায়নি। এদের মধ্যে অনেক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাও ছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘বিচারযোগ্য কোনও প্রমাণ’ পাওয়া যায়নি।

জাকিয়া জাফরি ‘আমলাতান্ত্রিক নিষ্ক্রিয়তা, পুলিশের আত্মতুষ্টি ও ষড়যন্ত্র, দাঙ্গা ঘটানোর নির্দেশনা’ সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।

সূত্র: বিবিসি