মহাগুরুকে নিয়ে মহাস্বপ্ন দেখছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি

চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে ফের পশ্চিমবঙ্গে সক্রিয় হচ্ছেন মিঠুন চক্রবর্তী। জানা গেছে, খোদ মোদি-শাহর পরামর্শে বাংলায় গেরুয়া রাজনীতির হাল ফেরাতে আসরে নামছেন তিনি। রাজ্যে তার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগতে চায় বিজেপি। আর তাই মরা গাঙে বান ডাকতে মহাগুরুকে নিয়ে মহাস্বপ্ন দেখছে বঙ্গ বিজেপি। বুধবার কলকাতায় রোড-শোয়ের মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের গেরুয়া রাজনীতির দ্বিতীয় ইংনিস শুরু করতে চলছেন মিঠুন চক্রবর্তী।

একুশের বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পর থেকে এলোমেলো হয়ে গেছে গেরুয়া শিবির। দলের অভ্যন্তরীন সমস্যার পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। অনেকেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে যান। এর প্রভাব পড়ে একুশের বিধানসভা ভোটের পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে। পুরসভা ভোটসহ উপনির্বাচনগুলোতে একটি আসনও নিজেদের পক্ষে আনতে পারেনি গেরুয়া শিবির। মাত্র দুই বছরে পশ্চিমবঙ্গের গেরুয়া শিবিরের এই হালে উদ্বিগ্ন মোদি-শাহ-নাড্ডারা।

লোকসভা ভোটের আগে এই পরিস্থিতি বদলে এখন মরিয়া গেরুয়া শিবির। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপিকে বিভিন্ন সাংগঠনিক দাওয়াই দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের মানুষের কাছে দলের জনপ্রিয়তা ফেরাতে এবার মহাগুরু মিঠুনের শরণাপন্ন হয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপি।

একুশের বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে মিঠুন চক্রবর্তী তৃণমূল শিবির বদলে পদ্মআসনে বসেন। তার আগমনে অল্প সময়ে দলের কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগে। বিভিন্ন জনসভায় তার সিনেমার কড়া ডায়লগ সেইসময় রাজনৈতিক পরিবেশে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি করে। যদিও তার সুফল ইভিএমে তুলতে পারেনি বিজেপি।

বিজেপির এক রাজ্য নেতা এপ্রসঙ্গে বলেন, ‘মিঠুন একজন স্বচ্ছ চরিত্রের মানুষ। তার বিরুদ্ধে ওঠা চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারি থেকে তিনি নিজে সমস্ত টাকা সুদ সমেত ফেরত দিয়ে মুক্ত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, দেশজুড়ে একাধিবার তিনি শ্রেষ্ঠ আয়কর দাতা হয়েছেন। বলিউডেও তার বিরুদ্ধে কেউ কোনও দিন আঙুল তুলতে পারেনি। বাংলা তথা দেশজুড়ে এমনকি বিদেশেও তার অসম্ভব জনপ্রিয়তা এখনও রয়েছে। তিনি বাংলায় প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যুক্ত হলে আমাদের লাভ হবে। অপর দিকে চাপে পড়বে তৃণমূল। দলের কর্মীরাও উদ্বদ্ধু হবেন’।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত থেকে গেরুয়া পতাকা তুলে নিয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। এবার গত রবিবার মোদি-শাহর অনুরোধে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতায় এসে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হচ্ছেন মিঠুন। মুরলিধর সেন লেনে বিজেপির কার্যালয়ে গিয়ে সুকান্ত মজুদারকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি  গেরুয়া রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন।

জানা গেছে, বিজেপির পক্ষ থেকে জেলায় জেলায় রোড-শো থেকে জনসভায় এবার নিয়মিত অংশ নেবেন তিনি। আর তার প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে বুধবার ভারত কেশরী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে গোলপার্ক থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত মহামিছিলে সুকান্ত মজুমদার,শুভেন্দু অধিকারীকে সঙ্গে নিয়ে অংশ নেবেন মিঠুন চত্রবর্তী। প্রথমে এই মিছিলটি কলকাতা পুলিশ অনুমতি না দিলেও হাইকোর্টে যায় বিজেপি। শর্তসাপেক্ষে মিছিলের অনুমতি সোমবার দিয়েছে আদালত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে একুশের বিধানসভা ভোটের পর প্রথম বড়মাপের এই রাজনৈতিক কর্মসূচিকে সফল করতে মরিয়া পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি। মহা মিছিলে পাঁচ হাজার মানুষের জমায়েতকে টার্গেট করেছে বিজেপি।