জ্যোতি বসু সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডিজের শিলান্যাস শুক্রবার

পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জ্যোতি বসুর মৃত্যুর পর তার স্মৃতি ও কর্মকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কলকাতার সল্টলেকে ‘জ্যোতি বসু সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডিজ’ নামে একটি কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নেয় বাম ফ্রন্ট সরকার। কিন্তু জমি জটিলতায় এই কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ পিছিয়ে পড়ে। অবশেষে শুক্রবার (৮ জুলাই) দুপুরে গবেষণা কেন্দ্র তৈরির শিলান্যাস অনুষ্ঠান হবে।

কেন্দ্রটি গড়ে তোলার লক্ষ্যে সিপিএম বাম ফ্রন্ট সরকারের কাছ থেকে পাঁচ একর জমি কেনে। এমনকি নিউটাউনের নাম জ্যোতি বসু নগর করারও সিদ্ধান্ত নেয়। সিপিএম পাঁচ একর জমির জন্য পাঁচ কোটি টাকা প্রদান করে জমির মালিক রাজ্য সরকারের সংস্থা হিডকোকে। কিন্তু ২০১১ সালে বাম ফ্রন্টের পরাজয়ের পর সবকিছু উল্টে যায়। জ্যোতি বসু নগর ফিরে আসে নিউ টাউনে। ফলে সিপিএমের কেনা পাঁচ একর জমির দখল আটকে যায় বিভিন্ন জটিলতার কারণে। এরপরেই সিপিএম অভিযোগ তোলে রাজনৈতিক হিংসার।

এই জমি নিয়ে সিপিএমের সঙ্গে তৃণমূলের বাগযুদ্ধের পর ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও অশোক ভট্টাচার্যকে সঙ্গে নিয়ে জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রের অন্যতম কর্ণধার রবীন দেব দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। মমতা সব ঘটনা শোনার পর এই জমি সিপিএমকে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ওই বছরের আগস্ট মাসে এই পাঁচ একর জমি জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রের নামে দেওয়ার জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। এরপরেই তৎকালীন পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এই জমির জন্য রি-অ্যালটমেন্ট লেটার ইস্যু করেন। একই সঙ্গে ওই জমির আইনি দখলের জন্য বকেয়া টাকা পরিশোধের পর ‘পজিশন লেটার’ তুলে দেওয়া হয় জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রকে। 

জ্যোতি বসু সেন্টার ফর সোশাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের নামে কেনা হয়েছে জমিটি। ট্রাস্টের সচিব রবীন দেব। এতে রয়েছেন বিমান বসুসহ বিশিষ্ট নেতারা। গত বছর ৮ জুলাই থেকে জমিতে বোর্ড লাগিয়ে একাংশে বৃক্ষরোপণও করা হয়েছে।  

এখানে থাকবে জ্যোতি বসু ও বাম আন্দোলন সংক্রান্ত সংগ্রহশালা, গ্রন্থাগার, প্রদর্শনশালা ও অডিটোরিয়াম। থাকবে অতিথিদের জন্য থাকার ব্যবস্থাও। যারা বাম আন্দোলন নিয়ে গবেষণা করতে চান, তাদের জন্য তথ্য ও নথিপত্রের সংগ্রহও থাকবে। এই বিষয়ে ইতোমধ্যে সক্রিয়ভাবে কাজে নেমে পড়েছেন রবীন দেব। 

নির্মাণের নকশা তৈরির কাজ চলছে। একবার নকশা তৈরির কাজ শেষ হয়ে গেলে, দ্রুতই নির্মাণকাজও শুরু হয়ে যাবে। শুক্রবার দুপুরে গবেষণা কেন্দ্র তৈরির শিলান্যাস অনুষ্ঠান হবে।