সম্পত্তি বৃদ্ধি: ইডির নজরে পশ্চিমবঙ্গের শাসক ও বিরোধীদলীয় নেতা-মন্ত্রীরা

শাসকদল তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের পর এবার পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী শিবিরের ৩০ জন নেতার সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলাতেও ভারতের কেন্দ্রীয় আর্থিক দুর্নীতি দমনকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-কে পক্ষভুক্ত করার নির্দেশ দিলো কলকাতা হাইকোর্ট। 

'আর্থিক দুর্নীতি' বিষয় হওয়ায় আগেই রাজ্যের শাসক শিবিরের বর্তমান ও প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বিধায়ক মিলিয়ে ১৯ জনের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় ইডিকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। এবার ওই সংক্রান্ত আরেকটি জনস্বার্থ মামলাতেও একই নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জনপ্রতিনিধিদের সম্পত্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে কীভাবে?—সেই প্রশ্ন তুলে ৫ বছর আগে ২০১৭ সালে মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। শাসক শিবিরের মন্ত্রী-বিধায়কদের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে মামলা করেন জনৈক বিপ্লবকুমার চৌধুরি ও আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস। অপর দিকে, বিরোধী শিবিরের নেতাদের সম্পত্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে কী নিয়ে, সে প্রশ্ন তুলে মামলা করেন অরিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

তালিকায় নাম থাকারা হলেন— সিপিআইএম-এর সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক নারায়ণ ভট্টাচার্য, ধীরেন বাগদি এবং কান্তি ভূষণ গঙ্গোপাধ্যায়। কংগ্রেসের অধীর রঞ্জন চৌধুরী, আবু হেনা, মোহিত সেনগুপ্ত, নেপাল মাহাতো, মইনুল হক, সাবিনা ইয়াসমিন, সমর মুখোপাধ্যায়, শাওনি সিংহ রায় এবং শেখ সফিউজ্জামান। পাশাপাশি, তালিকায় বামফ্রন্টের চন্দন সাহা, রামচন্দ্র ডোম, দেবেশ দাস, বংশ গোপাল চৌধুরী, বাসুদেব খান, বাসুদেব মেটে, ধীরেন্দ্রনাথ মাহাতো, আনিসুর রহমান সরকার, আবুল হাসনাত, গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, খগেন মুর্মু, দেবাশীষ বসু এবং অসিত কুমার মালিকের নাম রয়েছে। নাম রয়েছে বিজেপির রুপারানি মণ্ডল, তরুণ কান্তি ঘোষ, সুধীর কুমার পান্ডে এবং ফনি ভূষণ মাহাতোর।

মামলাকারীর দাবি, ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের কাছে সম্পত্তির হলফনামা জমা দিয়েছিলেন ওই নেতারা। ২০১৬ সালেও সম্পত্তির পরিমাণ হলফনামায় জানান তারা। হিসেব-নিকেশ করে দেখা গেছে, পাঁচ বছরে একেক জনের সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে কয়েক শ গুণ পর্যন্ত। কীভাবে এই সম্পত্তি বৃদ্ধি পেলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন অরিজিৎ বাবু। অভিযোগ— বিরোধী নেতাদের আয়বহির্ভূত সম্পত্তির জেরেই বৃদ্ধি। 

উল্লেখ্য, আগে অস্বাভাবিক সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ আনা হয় তৃণমূলের শোভন চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অমিত মিত্র, অর্জুন সিং, ব্রাত্য বসু, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মলয় ঘটক, গৌতম দেব, ইকবাল আহমেদ, স্বর্ণকমল সাহা, জাভেদ খান, অরূপ রায়, আবদুর রেজ্জাক মোল্লা, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, শিউলি সাহা, বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মতো ১৭ জন হেভিওয়েটের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, তালিকায় নাম রয়েছে সদ্য প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সাধন পাণ্ডেরও।