গাধার দুধ প্রতি লিটার দুই হাজার রুপি!

গাধাকে নিয়ে বিভিন্ন কৌতুক প্রচলিত থাকলেও গাধার দুধ নিয়ে হাসাহাসির কোনও সুযোগ থাকছে না। এমনি এমনিতো আর বলা হয় না, মিশরের রানি ক্লিওপেট্রার সৌন্দর্যের গোপন রহস্য ছিল গাধার দুধ! আর তাই গাধার দুধ বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার দুই হাজার ভারতীয় রুপিতে।


বিতর্ক থাকলেও ভারতের তামিলনাড়ুতে গাধার দুধ বিক্রি করছেন একটি সম্প্রদায়। তাদের দাবি, নবজাতক শিশুর জন্য উপকারি উপাদান রয়েছে গাধার দুধে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি তেলেঙ্গানা থেকে ২০ সদস্যের চারটি পরিবার ১৫ জোড়া গাধা দিয়ে সিভাজিপালেম এলাকায় এসে বসবাস শুরু করেছে। এরাই গাধার দুধ বিক্রি করছেন। তারা দাবি করছেন, নবজাতকের অ্যাজমা ও শ্বাসযন্ত্রের যেকোনও সমস্যায় ওষুধের মতো কাজ করে।
গাধার দুধ বিক্রিকারী জি লিঙ্গামা নামে নারী জানান, বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে ঘুরে তারা গাধার দুধ বিক্রি করেন। এক কাপ (২৫ মিলিলিটার) গাধার দুধ ২০০ রুপিতে তারা বিক্রি করছেন। কেউ যদি বেশি কিনতে চায় তাহলে প্রতি লিটারে দাম রাখা হয় ২ হাজার রুপি।  তাদের প্রত্যেকেই প্রতিদিন ৭০০-৮০০ রুপি আয় করছেন গাধার দুধ বিক্রি করে। লিঙ্গামা বলেন, ‘যারা বিশ্বাস করেন গাধার দুধ ওষুধের কাজ করে তারা কোনও দামদর ছাড়াই কিনছেন। আমরা গত বছরও এখানে এসে গাধার দুধ বিক্রি করেছিলাম। এখান থেকে আমরা বিজয়ওয়াদাতে যাব।


গাধার দুধ কিনতে আসা কে সত্যবথি নামের এক গৃহবধূ জানান, তিনি ৭৫ মিলিলিটার কিনেছেন। এর আগেও তারা গাধার দুধ কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের সম্প্রতি একটি ছেলে হয়েছে। যখন শুনলাম আমাদের এলাকায় গাধার দুধ বিক্রি হচ্ছে, তখন আমি খুব খুশি হয়েছি। শিশুর জন্য এটা খুব ভালো। এটা অনেক বেশি আয়ুর্বেদিক।’
গৃহবধূর মতের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন এক জ্যেষ্ঠ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক। শ্রিনগরের শ্রি আয়ুর্বেদা হেলথ সেন্টারের চিকিৎসক ভি সুশিলা জানান, যেসব নবজাতকের অ্যাজমা, যক্ষ্মা ও ঠোঁটে সংক্রমণ আছে, তাদের জন্য গাধার দুধ সবচেয়ে ভালো ওষুধ।
গাধার দুধের চিকিৎসা গুণের কথা জানিয়েছেন বিশাখাপাটনাম জেলার পশু চিকিৎসালয়ের যুগ্ম পরিচালক ভেঙ্কটেশ্বর রাও। তিনি জানান, মায়ের বুকের দুধের মতোই পুষ্টিকর গাধার দুধ। এছাড়া গাধার দুধে প্রোটিনের পরিমাণ কম কিন্তু ল্যাকটোজের পরিমাণ বেশি।
ভেঙ্কটেশ্বর রাও বলেন, ‘৬-৮ মাস বয়সের শিশুদের অ্যাজমা ও শ্বাসযন্ত্রের অ্যালার্জি রোগের চিকিৎসায়  প্রাচীনকাল থেকেই গাধার দুধ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বেঙ্গালুরু ও চেন্নাইয়ে গাধার দুধের জনপ্রিয়তা রয়েছে। এতে শরীরের চামড়া সুন্দর ও মসৃন হয়। এটা কোনও কাকতালীয় ব্যাপার নয় যে, রানি ক্লিওপেট্রার সৌন্দর্য্য চর্চার জন্য প্রতিদিন ৭০০ গাধার দুধ ব্যবহার করা হতো।’
তিনি আরও জানান, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গাধার দুধ বেশ জনপ্রিয়। গাধার দুধ থেকে তৈরি পনির বিশ্বের সবচেয়ে দামি দুগ্ধজাত পণ্য।

/এএ/