সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় এবার নজরে মুখ্যমন্ত্রী মমতার পরিবার

এবার সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার। আয় বহির্ভূত সম্পত্তির হিসাব চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হলো কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার অরিজিৎ মজুমদার নামে জনৈক আইনজীবী এই মামলা দায়ের করেছেন। আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হতে পারে।

মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হস্তক্ষেপে চেয়ে মামলাকারী আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন এবং তার ছয় ভাই রয়েছেন। ১৯৯৭ সালে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে এই তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন।’

তার অভিযোগ, ‘২০১১ সাল থেকে বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৩ সালে খোদ বর্তমানে তৃণমূলের মুখপত্র কুণাল ঘোষ নিজেই অভিযোগ করেছিলেন যে, মমতা নিজেই বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা সারদা থেকে বেনামে প্রচুর সুবিধা নিয়েছেন।’

২০২১ সালে কলকাতা পৌরসভার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাই সমীর বন্দোপাধ্যায়ের স্ত্রী কাজরী বন্দোপাধ্যায়। কলকাতা পৌরনিগমের নির্বাচনে হলফনামা নিয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছেন, তার স্বামী (মুখ্যমন্ত্রীর ভাই) একজন সমাজ সেবক। নির্বাচন কমিশনের কাছে কাজরী এবং সমীর বন্দোপাধ্যায়ের সম্পত্তির খতিয়ান দেওয়া আছে। কিন্তু তাদের ছেলের সম্পত্তির হিসাব দেওয়া নেই।

আরও প্রশ্ন, তিনি সচেতনভাবেই কে.বি ফাউন্ডেশন , কে.এ ক্রিয়েটিভ এলএলপি সংস্থার কথা এড়িয়ে যান। তারা এই দুই সংস্থার অন্যতম কর্তা বলে অভিযোগ মামলাকারীর। 

মামলাকারী আরও উল্লেখ করেছেন, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে মমতা বন্দোপাধ্যায় ও তার পরিবারের নামে একাধিক বেসরকারি সংস্থা গড়ে উঠেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ড ইন্ফ্রা কলসালটেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ড প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ড ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস’ এবং ‘ত্রিনেত্র কলসালটেন্ট’। এগুলো মমতা বন্দোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরেই ধাপে ধাপে নিজের পরিবারের সদস্যেরা গড়ে তুলেছেন। এগুলো থেকে নামে-বেনামে প্রচুর বেআইনি আর্থিক লেনদেন হয় এবং মুখ্যমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা সুবিধা পেয়ে আসছেন বলেও অভিযোগ মামলাকারীর।

তার আবেদন, মুখ্যমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা একাধিক বেআইনি লেনদেন ও আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি গড়ে তুলেছেন। কিন্তু এর বিরুদ্ধে কেউ কোনও প্রতিবাদ করছে না। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই, ইডি বা আয়কর দফতরকে দিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করানো হোক।