নবান্ন অভিযানে চাঙ্গা বিজেপি

দিল্লি থেকে আসছে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’

নবান্ন অভিযানে ফের স্বমহিমায় পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি। ব্যাপক জনসমাগম আর বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের পুলিশের ব্যারিকেড, লাটিচার্জ, জলকামান আর কাঁদানে গ্যাসের সামনে লড়াইয়ে উজ্জীবিত মুরলীধর সেন লেনের নেতারা। যেভাবে অভিযানের সময় পুলিশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছে গেরুয়া শিবির তা দেখে খুশি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। সবমিলিয়ে গত বিধানসভা ভোটের আগের পরিবেশ দেখতে পারছে রাজ্য বিজেপি। এর প্রভাব আসন্ন পঞ্চায়েত ও লোকসভায় ফেলতে মরিয়া তারা। তাই রাজ্যজুড়ে দলের সাংগঠনিক কাঠামোর হাল হকিকত সরজমিনে দেখতে এবার দিল্লি থেকে আসছে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’।

ইতোমধ্যে কলকাতাসহ জেলাগুলোতে একপ্রস্থ প্রবাস করে গেছেন কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা। এবার পাকাপাকিভাবে কলকাতায় এসে রাজ্য বিজেপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আসন্ন নির্বাচনগুলোর রণকৌশল তৈরির রোডম্যাপ তৈরি করতে বৈঠক করতে আসছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল, পশ্চিমবঙ্গের নব নিযুক্ত পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে ও দুই সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য ও আশা লাকড়া। তারা শুধু রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বর সঙ্গেই বৈঠক করবেন না, দলের বিভিন্ন সেল ও মোর্চার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এমনটাই বিজেপি সূত্রের খবর।

জানা গেছে, রবিবার সকালে পটনা থেকে মঙ্গল পাণ্ডে, রাঁচি থেকে আশা লাকড়া কলকাতায় আসবেন। তাদের কলকাতা বিমানবন্দরে সম্বর্ধনা দেবেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। দিল্লি থেকে আসবেন সুনীল বনশাল ও অমিত মালব্য। দুপুর আড়াইটে থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত তারা রাজ্য বিজেপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, অমিতাভ চক্রবতীরাসহ থাকবেন বিভিন্ন মোর্চার সভাপতিরা। ওইদিনই বিকাল পাঁচটায় দলের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সন্ধ্যা সাতটায় আরও একটি বৈঠক করবেন তারা দলের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে।

একইভাবে সোমবার সারাদিন কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠক করবেন। ওইদিন বেলা ১১টায় পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির প্রতিটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই বৈঠকে প্রতিটি জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারাও থাকবেন। এরপর দলীয় মুখপাত্রদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তারা। বিকালে দলের লিগ্যাল সেলের নেতাদের সঙ্গেও তারা বৈঠক করবেন।

বিজেপি সূত্রের খবর, এই বৈঠকগুলোর মধ্য দিয়ে রাজ্যে দলের বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা বুঝে নিতে চান কেন্দ্রীয় নেতারা। একুশের বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর থেকে দলের রাজ্য সংগঠনে কী কী ফাঁক-ফোকর রয়েছে তা জানতে চাইছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বৈঠকের রিপোর্ট দিল্লিতে নিয়ে যাবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তারপর এই ফাঁক-ফোকরগুলো দ্রুত মেরামত করে যাতে সর্বশক্তি দিয়ে পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে ঝাঁপিয়ে পড়া যায় সেই রোড ম্যাপ ও গাইড লাইন তৈরি করে রাজ্য বিজেপিকে পাঠাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।  

জানা গেছে, রাজ্যে শাসকদল তৃণমূলকে এক ইঞ্চিও জায়গা না ছেড়ে রাজনৈতিকভাবে কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তার রণকৌশল তৈরি এখন মূল লক্ষ্য শাহ-নাড্ডাদের।