ব্যক্তিগত সফরে দিল্লিতে সন্তু লারমা

বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির অন্যতম কাণ্ডারি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা ব্যক্তিগত সফরে এখন ভারতে রয়েছেন। গত ৫ মে তিনি কলকাতায় আসেন, এরপর সোমবার (৮ মে) থেকে তিনি রাজধানী দিল্লিতে অবস্থান করছেন বলে বাংলা ট্রিবিউন জানতে পেরেছে।

বাংলাদেশে যেহেতু কয়েক মাস পরেই সাধারণ নির্বাচন, তাই সন্তু লারমার ভারত সফরকে অনেকেই হয়তো রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করবেন।

তবে সন্তু লারমার ঘনিষ্ঠ মহল থেকে এবং ভারতের সরকারি কর্মকর্তারাও এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন এটা পুরোপুরি ব্যক্তিগত সফর—এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজার কোনও অর্থ হয় না। 

অশীতিপর সন্তু লারমা শারীরিকভাবেও এখন পুরোপুরি সুস্থ নন। দিল্লিতে থাকাকালীন তিনি একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ডাক্তার দেখাবেন ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাবেন বলেও জানা যাচ্ছে।

সন্তু লামার ভারত সফর নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে ভারতের এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ভারতের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তিনি বহুদিন ধরেই এ দেশে যাওয়া-আসা করে থাকেন এবং এটা মোটেই নতুন কিছু নয়। এমন কী তার এক কন্যা কলকাতা শহরে থাকেন, ফলে একান্ত পারিবারিক কারণেও তাকে মাঝে মাঝে এদেশে আসতে হয়। 

তবে কোভিড মহামারির করণে মাঝে বহুদিন তিনি ভারতে আসতে পারেননি, এখন আরও সে কারণেই বিশেষ করে এসেছেন।

সন্তু লারমার ভারত সফর নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে ভারতের জাতীয় স্তরের দৈনিক ‘দ্য হিন্দু’। তারা লিখেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় বিভিন্ন ধরনের ‘এথনিক মুভমেন্ট’ এবং রোহিঙ্গা সঙ্কটের পটভূমিতে তার এই ভারত সফর আলাদা তাৎপর্য বহন করছে।image(2)

তবে সন্তু লারমার ঘনিষ্ঠ মহল থেকে এধরনের বক্তব্যকে জোরালোভাবে অস্বীকার করা হয়েছে।

তারা বলছেন, শান্তিচুক্তি বা রোহিঙ্গা পুনর্বাসন নিয়ে প্রবীণ এই নেতার অবস্থান বাংলাদেশে সুবিদিত। কিন্তু ব্যক্তিগত সফরে ভারতে এসে তিনি সে সব প্রসঙ্গে ভিন্ন দেশে মুখ খুলবেন এমনটা ভাবার কোনও কারণই নেই।

বস্তুত ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম দিল্লিতে তার সাক্ষাৎকারের জন্য অনুরোধ জানালেও তিনি তা সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ঘনিষ্ঠ অনুগামীদের এটাও জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিব্রত করতে পারে এমন কোনও কাজ তিনি বিদেশে এসে কখনোই করবেন না।

দিল্লিতে অবস্থানকালীন ভারতের শীর্ষ স্তরের কোনও রাজনীতিক বা নীতি-নির্ধারকের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করছেন না। তার সঙ্গীরা সন্তু লারমার জন্য উত্তরাখণ্ডের তীর্থস্থান হরিদ্বার ভ্রমণেরও আয়োজন করেছিলেন, কিন্তু অসুস্থতার জন্য সেই প্রোগ্রামও বাতিল করা হয়েছে।