কলকাতায় শুরু হলো ইন্দো-বাংলা নোয়াখালী উৎসব

কলকাতায় বসবাসকারি নোয়াখালীর মানুষের মুখে তৃপ্তির হাসি। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) কলকাতার সল্টলেকের পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ইন্দো-বাংলা নোয়াখালী উৎসবের উদ্বোধন হলো। উৎসবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, কলকাতাস্থ বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, অধ্যাপক মনোজ রায় ভৌমিক, বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক তরুণ চক্রবর্তী, সুকান্ত সাহা, ডাক্তার অর্চনা মজুমদার, ধিরাজ মোহন চন্দ্রসহ দুই বাংলার বিশিষ্ট জনেরা। ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত উৎসব চলবে।

স্বপন দেবনাথ প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের শুভ সূচনা করেন। দুই দেশের জাতীয় সংগীত ও পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর অতীতের স্মৃতিতে নোয়াখালীর কৃতি সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বাংলাদেশের নোয়াখালী উৎসবকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যতে তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, আমার জন্ম বাংলাদেশে মামা বাড়ি নোয়াখালীতে হয়েছিল। সেই কারণেই আমার নোয়াখালী লোকদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক অন্যরকম। এই সম্মেলনে দুই বাংলার মানুষ এসেছেন। আমাদের এই সংগঠন সর্ব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। কে হিন্দু, মুসলিম, ব্রাহ্মণ, চন্ডাল তাদের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। আমাদের এই মঞ্চ থেকে এই বার্তা দিতে চাই। স্বাধীনতা আন্দোলন ও বঙ্গভঙ্গের আন্দোলনে নোয়াখালীদের অবদান ভুলে যাওয়ার মতো নয়। 

বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব বলেন, এটি একটি আনন্দের সংবাদ। এপার বাংলা ও ওপার বাংলার নোয়াখালীর বাসিন্দাদের নিয়ে আজকের এই অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে সমগ্ৰ পৃথিবীর নোয়াখালীর বাসিন্দাদের এক জায়গায় নিয়ে এসে সামনের দিকে হাতে হাত রেখে এক সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া।

নোয়াখালী উৎসবের অংশগ্রহণ করেছেন অন্য এক মূল উদ্যোক্তা বাংলাদেশের নোয়াখালীর বাসিন্দা ফরিদ আহমেদ বাঙালি। তিনি বলেন, ভালোবাসা ও হৃদয়ের টানে শিকড়ের সন্ধানে আমরা কলকাতায় এসেছি। আজকের এই অনুষ্ঠান যারা আয়োজন করেছেন তারা সবাই নোয়াখালীর ভূমিপুত্র। এদের কারও জন্ম এখানে হলেও তাদের পূর্বপুরুষের জন্ম বাংলাদেশের নোয়াখালীতে। তাদের রেখে যাওয়া স্কুল, কলেজ, মাঠ সবকিছুই আমরা ব্যবহার করে শিক্ষা অর্জন করে জ্ঞান অর্জন করছি।

তিনি আরও বলেন, অনেকে সম্পদ রেখে এসেছে কিন্তু ভালোবাসা তাদের প্রতি আমাদের কম নেই। ১৯০৫ সালে যারা এই সংগঠনটা তৈরি করেছে তাদের উদ্দেশ্য ছিল সারা পৃথিবীর নোয়াখালীর বাসিন্দাদের এক মঞ্চে নিয়ে আসা। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন কমিউনিটির প্রধানরা এই অনুষ্ঠানে এসেছে। এতদুর থেকে আমরা এসেছি আমাদের কোনও ক্লান্তি নেই। আমরা আপন মানুষদের কাছে এসেছি। আজকে হৃদয়ের সঙ্গে হৃদয় দিয়ে মন খুলে কথা বলব।

অনুষ্ঠানে প্রায় শতাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশের নোয়াখালী থেকে কলকাতায় নোয়াখালী উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানান প্রধান উদ্যোক্তা খ্যাতনামা সাংবাদিক ও সমাজসেবক রক্তিম দাশ। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী দিনে এই উৎসব বাংলাদেশেও হবে।