স্বায়ত্তশাসন প্রত্যাহারের পর প্রথম কাশ্মির সফরে মোদি

ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগর গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০১৯ সালে রাজ্যের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেওয়ার পর, এই অঞ্চলে এটাই মোদির প্রথম সফর। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছ।

বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে সোজা শ্রীনগর আসেন মোদি। বিকেলে শ্রীনগরের বকসি স্টেডিয়ামে বিজেপির জনসভায় ভাষণ দেন তিনি। এ সময় মোদি বলেন, এ এক নতুন জম্মু ও কাশ্মির, যার জন্য আমরা বহু দশক ধরে অপেক্ষা করছিলাম।

সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর জম্মু ও কাশ্মিরের দ্রুত উন্নয়ন ঘটছে উল্লেখ করে মোদি আরও বলেন, ৩৭০ ধারা নেই বলেই ভূস্বর্গটির যুবকরা আজ তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে। তাদের প্রতিভা সম্মানিত হচ্ছে।

জম্মু ও কাশ্মির আজ মুক্তভাবে শ্বাস নিতে পারছে বলেও মন্তব্য করেন মোদি।

বিজেপি সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে কাশ্মিরের জন্য ৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন করেন মোদি।

মোদির সফর উপলক্ষে শ্রীনগরে কড়া নিরাপত্তা। ছবি: আল-জাজিরা।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করে বিজেপির প্রচারাভিযানের প্রতিশ্রুতি পূরণ করে মোদি সরকার। এই অনুচ্ছেদ জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের জন্য নিজস্ব পতাকা, সংবিধান, আইনসভা ও আইনকানুনসহ উল্লেখযোগ্য স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দিয়েছিল।

জম্মু ও কাশ্মির ছিল ভারতের একমাত্র রাজ্য, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস। অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের পর ১ কোটি ২০ লাখ বাসিন্দার এ রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণাধীন দুটি অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মির এবং প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চল লাদাখে ভাগ করা হয়।

এমনকি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গত ডিসেম্বরে ৩৭০ ধারা বাতিলকে বহাল রেখেছে। তবে মোদি সরকার জম্মু-কাশ্মিরের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে বিজেপিকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।  

সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থেই নির্বাচনের আগে মোদির এই অঞ্চল সফরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এর আগে, ২০ ফেব্রুয়ারি জম্মু সফর করলেও এটাই মোদির প্রথম শ্রীনগর সফর। আগের পার্লামেন্ট নির্বাচনগুলোতে জম্মুতে কয়েকটি আসনে জয়ী হলেও কাশ্মিরে এখন পর্যন্ত কোনও আসনে জয়ী হতে পারেনি বিজেপি।

এদিকে, মোদির সফরের আগে শ্রীনগরের রাস্তাগুলো পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে এবং তাঁকে স্বাগত জানাতে বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। তার সফর উপলক্ষে শ্রীনগরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শ্রীনগরের ভেতর ও বাইরে চলাচল করা যানবাহন তল্লাশি করা হচ্ছে। হাইওয়েগুলোতে মোবাইল চেকপয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। সমাবেশস্থল ও এর আশপাশের এলাকাগুলোকে নিরাপত্তার দুর্গ বানানো হয়েছে।