কলকাতায় ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে এখনও বের হচ্ছে মরদেহ!

কলকাতায় গার্ডেনরিচ এলাকায় বহুতল ভবন ধসের দুই দিন পরও ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে মরদেহ। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় সেখান থেকে আরেকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মহম্মদ জামিল নামে ওই ব্যক্তি ভবনটির বাসিন্দা ছিলেন। এই অগ্নিকাণ্ডে এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ হয়েছে।

রবিবার (১৭ মার্চ) রাতের ঘটনার পর সোমবার গার্ডেনরিচে পৌঁছায় ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) টিম। তবে সেদিন সন্ধ্যায় আলোর অভাবে থমকে যায় উদ্ধারকাজ। মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার শুরু হয় ধ্বংসস্তূপ সরানো।

রবিবার রাত প্রায় ১২টায় বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে বাড়ির একটি বড় অংশ। চাপা পড়ে যায় অনেক ঝুপড়ি, ছড়িয়ে পড়ে আর্তনাদের শব্দ। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। সেই ঘটনার পর থেকে ৪০ ঘণ্টার বেশি সময় কেটে যাওয়ার পরও উদ্ধার হয়েছে আরেকটি লাশ।

যে বাড়িটির অংশ ভেঙে পড়েছে, তার পাশেই ছিল ঝুপড়ি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঘটনার পর থেকেই মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়তে থাকে। যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে কেউ থাকতেন ওই ঝুপড়িতে, কেউ কাজ করতেন শ্রমিক তথা রাজমিস্ত্রির।

গার্ডেনরিচের ওই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট সব ইঞ্জিনিয়ারকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, পুরনিগমের পরিবেশ বিভাগে থেকে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে ওই বাড়িটির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

ভবন তৈরির সেই জমির মালিক মহম্মদ সরফরাজ ওরফে পাপ্পুকে গ্রেফতার করেছে গার্ডেনরিচ থানা। ঘটনার পরপরই মহম্মদ ওয়াসিম নামের এক প্রোমোটারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই প্রোমোটারই পাপ্পুর জমিতে বাড়ি তৈরি করছিল।

নির্মাণ কার্যক্রমটি বেআইনি ছিল তা স্বীকার করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই ভবন ধসের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বিরোধীরা। তাছাড়া বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। এরমধ্যে দ্বিতীয় গ্রেফতারের খবরে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গার্ডেনরিচে দ্বিতীয় অভিযুক্ত মহম্মদ সরফরাজ পলাতক ছিল ঘটনার পর থেকেই। বন্ধ ছিল ফোন। এদিন সন্ধ্যায় গার্ডেনরিচ এলাকা থেকেই তাকে গ্রেফতার  করা হয়েছে।

মহম্মদ ওয়াসিমের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে। ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুন, ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টা, অবৈধ নির্মাণের জন্য কলকাতা পৌরসভা আইনে মামলা করা হয়েছে।

অন্যদিকে পাপ্পুর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ খুনের চেষ্টা, ৩০২, ২৮৮ ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অবহেলামূলক আচরণসহ বেশ কিছু ধরায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।