কুয়েতের একটি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৫জন ভারতীয় অভিবাসী শ্রমিকের মৃতদেহ দেশে আনা হয়েছে। শুক্রবার (১৪ জুন) মরদেহগুলো একটি বিমানবন্দরের টার্মিনালে রাখা হয়েছে। সেখানে নিহতদের স্বজনরা তা দেখতে পারছেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
তেল সমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশটিতে বিদেশি শ্রমিকদের বসবাস করা একটি ভবনে বুধবার ভোরে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এই অগ্নিকাণ্ডে পঞ্চাশ জন নিহত হয়েছেন।তাদের মধ্যে ৪৫ জন ভারতীয়। আরও ডজনখানেক হাসপাতালে ভর্তি। উদ্বিগ্ন স্বজনরা তাদের প্রিয়জন মারা গেছে কিনা, সেই খবর নিতে উন্মুখ হয়ে বিমানবন্দর জড়ো হয়েছেন।
৩১ বছর বয়সী সিবিন আব্রাহামের প্রতিবেশী আনু আবি বলেছেন, ‘আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আশায় ছিলাম যে হয়তো সে বেরিয়ে গেছে, হয়তো সে হাসপাতালে আছে।’
আবি বলেছেন, আগস্টে সন্তানের প্রথম জন্মদিনে কেরালায় আব্রাহামের বাড়িতে ফিরে আসার কথা ছিল। আগুন লাগার মাত্র এক ঘণ্টা আগে আব্রাহাম তার স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন।
অপর স্বজনরা ভারতের দক্ষিণের কোচি বিমানবন্দরে একটি অপেক্ষায় ছিলেন। তাদের আত্মীয়দের দেহাবশেষ বহনকারী ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমানটি টার্মিনাল স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে তারা চোখের অশ্রু মুছেছিলেন।
কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি মৃতদের পরিবারের জন্য একটি সীমাহীন ক্ষতি। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া দরকার এবং আশা করা যায় যে কুয়েত সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
কুয়েতের দমকল বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ভবনটিতে প্রায় ২০০ জন মানুষ বাস করছিলেন এবং আগুনে আটকা পড়ার পর ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে অনেকে মারা যান। অনেক আহত ও দগ্ধ হন। পোড়ার কারণে অনেকের মৃতদেহ চেনা যাচ্ছে না এবং এখন তাদের মৃতদেহ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আগে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শনাক্ত করা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার উপসাগরীয় দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তা পদ্ধতি এবং অগ্নি বিধির অবহেলার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের সন্দেহে একজন কুয়েতি এবং দুই বিদেশি বাসিন্দাকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার কুয়েতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ ফাহদ আল-ইউসেফ নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘন করে এমন যেকোনও ভবন বন্ধ করার হুমকি দিয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে তিনজন ফিলিপিনোও ছিল। ফিলিপাইনের অভিবাসী শ্রমিক-বিষয়ক সচিব হ্যান্স লিও জে. ক্যাড্যাক বলেছেন, কর্তৃপক্ষ তাদের মরদেহ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।