যে গ্রামে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ওড়ে না

এক দুই বছর না, কয়েক যুগ ধরে গ্রামটির নীরব বিপ্লব করে যাচ্ছে। গ্রামটিতে ৩ সহস্রাধিক লোক বসবাস করেন। চার দশক ধরে গ্রামটি একটি ঐতিহ্য পালন করে যাচ্ছে। সে ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা, ব্যানার ও দেয়াল লিখন নেই।
নির্বাচন কমিশন আইন করার অনেক আগে থেকেই গ্রামটির প্রবীনরা রাজনৈতিক দলের কারণে যেনও নবীন প্রজন্মের মধ্যে বিভেদ তৈরি না হয় সে জন্য এই প্রবনতার প্রচলন শুরু করেন। এ ঐতিহ্যকে ধরে রেখে গ্রামটি নির্বাচনী উত্তেজনা সৃষ্টিকারী পোস্টার, ব্যানার ও পতাকা ওড়ানো হয় না।
গ্রামটি চেন্নাইয়ের ভেলোর-থিরোভান্নামালাই মহাসড়কের পাশে সান্তাবাসালের নিকটে অবস্থিত। গ্রামটির নাম ভেল্লুর।
১৮ বছরের প্রসান্ত জানান, মন্দিরের উৎসব ও বিয়েতে শুধু ব্যানার টানানো যায়। কিন্তু তাতে কোনও চলচ্চিত্র তারকা বা রাজনৈতিক নেতার ছবি রাখা হয় না।
এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সক্রিয় তরুণ প্রজন্মও। ২০ বছর বয়সী বালাজি জানান, আমরা প্রবীণদের সম্মান করি। তাই এখানে কোনও দেয়ালে স্লোগান নেই। আমি কখনও রাজনৈতিক দলের কাউকে পতাকা হাতে দেখিনি। এখানকার অনেক মানুষই এআইএডিএমকে, ডিএমকে ও ভিসিকে দলের সঙ্গে জড়িত আছেন। কিন্তু তারা গ্রামের নিয়ম মেনে চলেন।
নির্বাচনী প্রচারণা করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে গ্রামের প্রবীনদের অনুমতি নিতে হয়। ভোটের জন্য টাকা দেওয়া ও নেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে গ্রামের কেউ ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হতে চায় না। যে কোনও নির্বাচনে এখানে প্রায় ৯০ শতাংশ ভোট পড়ে।

স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা ভেরুমাইলন জানান, গ্রামে প্রায় ১ হাজার ভোটার রয়েছেন। তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের জন্য আমরা উৎসাহ দেই। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বুথ এজেন্ট নির্বাচন করি।

গত বিধানসভা নির্বাচনে সময় গ্রামের এক লোক নিজেদের ঘরে দেয়াল লিখন করেছিলেন রাজনৈতিক দলের সমর্থনে। এ জন্য ওই ব্যক্তিকে জরিমানা দিতে হয়। স্থানীয় এক গৃহনির্মাণকারী জানান, এখানে কোথাও দেয়ালে রাজনৈতিক স্লোগান নেই। বাড়ির মালিকরা দেয়াল লিখন বা গ্রাফিতি কিংবা কোনও বানী লিখে রাজনৈতিক দলকে সমর্থন দিতে পারেন না। সবাই একত্রিত থাকে এবং নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

/এএ/