ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং প্রশ্ন তোলেন, পাকিস্তান কি পারমাণবিক অস্ত্র পরিচালনার জন্য যথেষ্ট দায়িত্বশীল? প্রধানমন্ত্রীর “পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল” মেনে না নেওয়ার বার্তার কয়েকদিন পরই বৃহস্পতিবার (১৫ মে) এই মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র আন্তর্জাতিক তদারকির আওতায় আনতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
রাজনাথ সিং শ্রীনগরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১৫ কোর সদর দফতর পরিদর্শন করেন এবং সেখানে সেনাসদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব জানে আমাদের সেনাবাহিনীর লক্ষ্য কতটা নিখুঁত এবং তারা যখন আঘাত হানে, তখন শত্রুরাই হিসাব রাখে। আজ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সংকল্প কতটা দৃঢ়, তা বোঝা যায় এই কথায় যে আমরা পাকিস্তানের পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের তোয়াক্কা করিনি।’
রাজানাথ সিং আরও বলেন, ‘গোটা বিশ্ব দেখেছে কীভাবে পাকিস্তান দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে ভারতকে হুমকি দিয়েছে। আজ শ্রীনগরের মাটি থেকে আমি এই প্রশ্ন তুলতে চাই—এমন এক দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উচ্ছৃঙ্খল দেশের হাতে কি পারমাণবিক অস্ত্র নিরাপদ?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র তত্ত্বাবধানে নেওয়া উচিত।’
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে জঙ্গি হামলার প্রতিশোধে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালায়। এরপর প্রথম এই উপত্যকা সফর করলেন তিনি। সেনাসদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সেনাবাহিনীর সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, যুদ্ধ প্রস্তুতি পর্যালোচনা করেন তিনি। এছাড়া সীমান্ত এলাকায় পড়ে থাকা পাকিস্তানি গোলাবারুদও পরিদর্শন করেন তিনি।
এই সফরে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের উপ-রাজ্যপাল মনোজ সিনহা।
সেনা সদস্যদের শ্রদ্ধা জানিয়ে রাজনাথ বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন, আমি সেই সাহসী জওয়ানদের চূড়ান্ত আত্মত্যাগকে কুর্নিশ জানাই। পেহেলগামের নিরীহ নিহত মানুষদের প্রতিও আমার শ্রদ্ধা। আহত সেনাদের সাহসকেও আমি সালাম জানাই এবং তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।”
‘অপারেশন সিঁদুর’কে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযান হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে আমরা যেকোনো পর্যায়ে যেতে প্রস্তুত। পাকিস্তানকে জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতেই হবে।’