কুড়িয়ে পাওয়া ৩০০ কোটি টাকা পুলিশকে দিলো টোকিওবাসী

জাপানের রাজধানী টোকিওর সৎ নাগরিকেরা গত বছর প্রায় ৩১৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা (৩.৯৯ বিলিয়ন ইয়েন) পুলিশের কাছে জমা দিয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ৮৬ লাখ ৮৯ হাজার হারানো টাকা পুলিশের কাছে জমা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।

জাপানের ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সির তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালে এই অর্থের পরিমাণ ছিল ৬০ কোটি ইয়েন। গত বছরের এই কুড়িয়ে পাওয়া অর্থ পুলিশের কাছে জমা দেওয়ার রেকর্ড হয়েছে। এর আগের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ২০১৯ সালে। ওই সময় ৩.৮৪ বিলিয়ন ইয়েন জমা হয়েছিল।

যারা টাকা হারিয়েছেন তাদের জন্য স্বস্তির ছিল বছরটি। পুলিশের হারানো ও উদ্ধার কার্যালয় বলেছে, জমা হওয়া এসব অর্থের প্রায় ৩ বিলিয়ন ইয়েন মূল মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৪৮০ মিলিয়ন ইয়েন দেওয়া হয়েছে যারা এই হারিয়ে যাওয়া নগদ অর্থ পেয়ে তা রেখে না দিয়ে পুলিশের কাছে জমা দেওয়ার মতো সম্মানজনক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

২০২২ সালে নগদ অর্থ ছাড়াও ৩.৪৩ মিলিয়ন পণ্যও পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। ড্রাইভিং লাইন্সে ও বিভিন্ন ধরনের আইডির পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি, ৭ লাখ ৩০ হাজার। এরপর ছিল ৩ লাখ ৯০ হাজার গণপরিহবনের কার্ড, গ্লাভস ছিল ৩ লাখ। এছাড়া কাপড় ও মানিব্যাগের সংখ্যাও ছিল প্রায় সমান।

জাপানের হারানো পণ্য আইন অনুসারে, কেউ যদি তা খুঁজে পেয়ে পুলিশের কাছে জমা দেন তাহলে তিনি ৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত পুরস্কার দাবি করতে পারেন যদি মালিক তা ফেরত নেন।

তিন মাসের মধ্যে কেউ যদি হারানো অর্থের দাবি না করেন তাহলে পুরো অর্থ চলে যায় যিনি খুঁজে পেয়েছেন তার কাছে। তিনি যদি আরও দুই মাসের মধ্যে সেই অর্থের মালিকানা দাবি না করেন তাহলে তা স্থানীয় সরকারের সম্পদে পরিণত হয়।

পুলিশের ধারণা, এত বিপুল পরিমাণ হারানো টাকা জমা হওয়া ইঙ্গিত দিচ্ছিলো করোনাভাইরাস মহামারির অবসান হচ্ছে।

অবশ্য সবাই ‘সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’ বলে মনে করেন না। জাপানের উত্তরাঞ্চলীয় দ্বীপ হোক্কাইদোর পুলিশ চেষ্টা করছে ১০ মিলিয়ন ইয়েনের মালিককে খুঁজে বের করতে। জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে সাপ্পোরো শহরে এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী এই অর্থ কুড়িয়ে পেয়েছেন। গত মাসে পুলিশ হারানো অর্থ পাওয়ার ঘোষণা দিলে অন্তত ১৩ ব্যক্তি তা নিজেদের বলে দাবি করেছেন। একজন দাবি করেছেন, পণ্য ডেলিবারি দেওয়ার সময় তার ব্যাগ থেকে হারিয়ে যায় এই অর্থ। অপর একজন দাবি করেছেন, তাদের অসুস্থ বাবা-মা ভুল করে এই টাকা ছুঁড়ে মেরেছেন।

এই দাবিকারীদের মধ্যে কেউ প্রকৃত মালিক কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পুলিশের কাছে এপ্রিল পর্যন্ত সময় রয়েছে। এরপর টাকাগুলো একজন সরকারি কর্মী পাওয়ার কারণে তা সাপ্পোরো সরকারের সম্পদে পরিণত হবে।