আল আকসায় ইসরায়েলি সেটেলারদের জড়ো হওয়ার ডাক ইহুদি রাব্বিদের

আল আকসায় ইসরায়েলের নতুন নিষেধাজ্ঞার পর ফিলিস্তিনিদের বড় ধরনের বিক্ষোভের শঙ্কার মুখে ইহুদি ধর্মগুরুরা (রাব্বি) সেটেলারদের মসজিদে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইসরায়েলের ৪০জন রাব্বির স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।

20170727_2_24975954_24503748-1

ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ইহুদিদের আল আকসা প্রাঙ্গনে জড়ো হওয়ার জন্য আহ্বান জানানোর এই উদ্যোগ নেন উগ্রপন্থী রাব্বি ডোব লায়র ও রাব্বি পরিষদের প্রধান ওয়াইসরায়েল রোজেন। আল আকসার আশেপাশে ইহুদিদের অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য এই আহ্বান জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পবিত্র পাহাড় রক্ষায় এখন উঠে দাঁড়ানোর সময়। পবিত্র স্থানে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে সেখানে জড়ো হওয়া উচিত।

টেম্পল অর্গানাইজেশনের যৌথ কমিটি গত কয়েকদিনে অন্তত দেড় হাজার ইহুদি আল আকসায় প্রবেশ করেছেন বলে জানিয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে গোলাগুলির ঘটনার পর মুসলিমদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকা অবস্থায় এই ইহুদিরা আল আকসায় প্রবেশ করেন। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ইহুদিদের প্রবেশের হার দ্বিগুণ হয়েছে এই সময়।

আল আকসার প্রবেশাধিকার মুসলিম ও ইহুদিদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। মুসলমানদের কাছে আল আকসা প্রথম কিবলা এবং ইহুদিদের কাছে তা পবিত্র টেম্পল মাউন্ট।

টানা কয়েকদিন সংঘর্ষের পর বৃহস্পতিবার ইসরায়েল আল আকসা থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরিয়ে নেওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতেই ফিলিস্তিনিরা আন্দোলনের জয় উদযাপনের সময় ইসরায়েলের নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হন। এরপর শুক্রবার  জুমার নামাজকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে জেরুজালেম। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে বিক্ষোভের শঙ্কায় ইসরায়েল আবারও ৫০ বছরের কম বয়সী মুসলিমদের জন্য মসজিদ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করলে।

১৪ জুলাই আক আকসার সামনে বন্দুকধারীর হামলায় দুই ইসরায়েলি পুলিশ ও তিন সন্দেহভাজন নিজত হওয়ার পর ইসরায়েল মেটাল ডিটেক্টর ও অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থাপন করে। নিহত সন্দেহভাজনদের তিনজনই ছিলেন আরব-ইসরায়েলি। ইসরায়েলের পুলিশের দাবি, নিহতরা মসজিদের ভেতরে অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিল। নিরাপত্তার কথা বলে ইসরায়েল মেটাল ডিটেক্টর স্থাপনসহ বেশ কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করে।

মেটাল ডিটেক্টর স্থাপনের পর মুসলিম ধর্মীয় নেতারা মসজিদে প্রবেশে অস্বীকৃতি জানান। তারা দাবি করেন, এর মধ্য দিয়ে সহাবস্থানের নীতি ভঙ্গ করা হয়েছে। যে সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন ধর্মালম্বীদের প্রার্থণার সুযোগ রাখা হয়েছে। ধর্মীয় নেতারা মসজিদের প্রবেশ পথ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান।

২১ জুন শুক্রবার জুমার নামাজের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকার পরও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিরাপত্তা ব্যবস্থা অটুট রাখেন। ওই দিনও জুমার নামাজে ৫০ বছরের কম বয়সীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।  প্রতিবাদে  ফিলিস্তিনিরা সড়কে জুমার নামাজ আদায় করেন। পরে  সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্র ও শনিবারের সংঘর্ষে চার ফিলিস্তিনি নিহত হন। এই সময়ে পশ্চিম তীরে ছুরিকাঘাতে তিন ইসরায়েলি নিহত হন বলে দাবি করেছে তেল আবিব।  এছাড়া মঙ্গলবারের সংঘর্ষে আহত এক ফিলিস্তিনির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এবারের সংঘর্ষে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ জনে। সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর।

/এএ/