অর্থ দিয়ে মুক্তি পেতে আলোচনা করছেন সৌদি প্রিন্স আল-ওয়ালিদ

র্নীতিবিরোধী অভিযানে ‍দুই মাস ধরে আটক থাকা সৌদি আরবের ধনকুবের প্রিন্স আল-ওয়ালিদ বিন তালাল অর্থের বিনিময়ে মুক্তি পেতে সরকারের সঙ্গে সমঝোতার জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। আলোচনা চললেও তিনি এখন সরকারের শর্তে রাজি হননি বলে একজন জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

প্রিন্স আল-ওয়ালিদ বিন তালাল

৪ নভেম্বর শুরু হওয়া দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের প্রথম দিনেই প্রিন্স আল-ওয়ালিদসহ আটক হন কয়েকজন মন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী, প্রিন্স ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। তাদের আটক করে রাখা হয় পাঁচ তারকা হোটেল রিৎজ কার্লটনে। দুর্নীতির অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দেওয়ার শর্তে মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয় তাদের। অনেকেই সেই প্রস্তাব মেনে এরইমধ্যে মুক্তি পেয়েছেন। তবে টুইটারের মতো বড় বড় কোম্পানিতে বিনিয়োগকারী ধনকুবের আল-ওয়ালিদ মুক্তির প্রস্তাব না মেনে মামলা চালানোর কথা বলেছিলেন। এই অভিযানে আটক রয়েছেন এই প্রিন্সের আরও দুই ভাই।

তিন ছেলের আটকের প্রতিবাদে ১০ নভেম্বর থেকে অনশন শুরু করেন আল-ওয়ালিদের বাবা প্রিন্স আবদুলআজিজ। অনশনে ১০ কেজি ওজন হারিয়েছেন ৮৬ বছরের এই বৃদ্ধ।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তিনি (আল-ওয়ালিদ) সরকারকে একটি অংকের অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব করলেও তা সরকারের চাহিদার সঙ্গে মেলেনি। আজ (রবিবার) পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এখনও তা অনুমোদন করেননি।’

প্রিন্স আল-ওয়ালিদের সমঝোতা আলোচনার সঙ্গে জড়িত আরেকটি সূত্র রয়টার্সকে শনিবার জানিয়েছে, তিনি দোষ স্বীকার না করে সরকারকে অনুদান দিতে চেয়েছেন। তার ওই অর্থ তিনি নিজের ইচ্ছেমতো উৎস থেকে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু সরকার তার এসব শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

এদিকে নতুন সমঝোতার খবরের পরই কিংডম হোল্ডিং কোম্পানির শেয়ারের দাম রবিবার এক লাফে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে গেছে। সমঝোতা হলে কোম্পানিটির মূলধনে প্রায় ৮৬ কোটি ডলার যোগ হবে। প্রিন্স আল-ওয়ালিদ আটক হওয়ার আগেও কোম্পানিটির শেয়ারের দাম মূল দামের চেয়ে ৭ শতাংশ কম ছিল।

আর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সৌদি বিললাদিন গ্রুপের পক্ষ থেকে শনিবার বলা হয়েছে,  সমঝোতার অংশ হিসেবে তাদের কিছু সংখ্যক শেয়ার সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বকর বিন লাদিন ও তার পরিবারের কয়েক সদস্যকে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে আটক করা হয়েছে।

এর আগে দুর্নীতির অভিযোগে তিন সপ্তাহের বেশি সময় বন্দি থাকার পর গত নভেম্বরের শেষ দিকে মুক্তি পান সৌদি প্রিন্স মিতেব বিন আব্দুল্লাহ। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একশ কোটির (এক বিলিয়ন) বেশি ডলারের ‘গ্রহণযোগ্য সমঝোতা’র পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।  প্রিন্স মিতেবকে এক সময় সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ভাবা হত। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের চাচাত ভাই প্রিন্স মিতেব দেশটির ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান ছিলেন। তাকে গ্রেফতারের আগেই বরখাস্ত করা হয়।