ভালোবাসা দিবস ইসলামবিরোধী নয়: মক্কা শরিয়া পুলিশের সাবেক প্রধান

ভালবাসা দিবসকে ‘ধর্মের সঙ্গে জড়িত নয় এমন একটি ভালো দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন সৌদি আরবের মক্কার শরিয়া পুলিশের সাবেক প্রধান ও মওলানা শেখ আহমেদ বিন কাসিম আল-ঘামদি। বুধবার ভালবাসা দিবসের সমর্থনে এ মন্তব্য করেছেন তিনি।

শেখ আহমেদ বিনকাসিম আল-ঘামদি

আল-আরাবিয়া টেলিভিশনকে দেওয়া বক্তব্যে আল-ঘামদি বলেন, ‘এটি একটি ভালো সামাজিক উৎসব। এই দিবসে মানুষকে শুভেচ্ছা জানানো শরিয়া বিরুদ্ধ নয়।

আল-ঘামদি সৌদি আরবের মক্কায় শরিয়া পুলিশের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার এমন বক্তব্য দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়ারই প্রতিফলন। দেশটিতে দীর্ঘ দিন ধরে চলা ইসলামি রক্ষণশীলতার পরিবর্তে উদার নীতি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছেন ৩২ বছর বয়সী এই যুবরাজ। ধর্মীয় সংস্কারের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে সৌদি নারীরা গাড়ি চালানো ও স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখার অনুমতি পেয়েছেন এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শন শুরু হয়েছে। কয়েকদিন আগে দেশটির শরিয়া বোর্ডের আরেক সদস্য জানিয়েছিলেন, সৌদি নারীদের জন্য বোরকা পরা বাধ্যতামূলক নয়।

ভালোবাসা দিবসের প্রতি সমর্থনের কথা ব্যাখ্যা করে আল-ঘামদি বলেন, ‘ভালোবাসা দিবসসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে পালিত বিভিন্ন দিবস ও সামাজিক উৎসবে শুভেচ্ছা দেওয়া-নেওয়া এবং ফুল আদান-প্রদান করা ভালো কাজ। কিন্তু তা হতে হবে শান্তিকামী মানুষের সঙ্গে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে এমন কারও সঙ্গে যেনও না হয়।’

সৌদি আরবের কোনও মওলানার কাছ থেকে এমন বক্তব্য শোনা দুই বছর আগেও সম্ভব ছিল না। শরিয়া পুলিশ দুই বছর আগেও লাগামহীন ক্ষমতা চর্চা করত। শরিয়ার বিধি-নিষেধ কার্যকর করতে গিয়ে তারা যে কড়াকড়ি করেছে তাতে করে অনেক সমালোচনায় পড়তে হয়েছে তাদেরকে।

ধর্মীয় সংস্কৃতি সংস্কারের পাশাপাশি দেশটির শরিয়া পুলিশেও সংস্কার শুরু হয়েছে। এখন ধর্মীয় রীতি-নীতি না মানলে কাউকে গ্রেফতার করার ক্ষমতা নেই এই পুলিশের। সৌদি আরবে দিবসটি পালন নিষিদ্ধ হলেও এ বছর ভালবাসা দিবসের আগে জেদ্দাহর মতো বড় শহরগুলোতে ফুল বিক্রেতারা শরিয়া পুলিশের কোনও বাধা ছাড়াই প্রকাশ্যে লাল গোলাপ ও বিভিন্ন উপহার বিক্রি করতে পেরেছে।

উল্লেখ্য, ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস পালিত হয়। তবে সৌদি আরবসহ কয়েকটি ইসলামি দেশে দিবসটি পালন করা নিষিদ্ধ। ‘অনৈসলামিক’ আখ্যায়িত করে ২০১৬ সালে পাকিস্তানের আদালতও দিবসটিকে নিষিদ্ধ করেছে। একইভাবে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশেও নিষিদ্ধ ভালোবাসা দিবস। সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।