আইএস নির্মূলে বদ্ধপরিকর সিরীয় বাহিনী, এলাকা ত্যাগের সুযোগ দেওয়ার কথা অস্বীকার

রবিবার সিরিয়ার সরকারি বাহিনী রাজধানী দামেস্কর দক্ষিণে আইএসের দখলে থাকা একটি এলাকা পুনরুদ্ধারে প্রচণ্ড যুদ্ধ করেছে। সিরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা সানার বরাত দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডিল ইস্ট আই জানিয়েছে, যদিও ইরাক, তুরস্ক ও জর্ডান সীমান্তে এখনও অনেক এলাকা সিরীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে, যুদ্ধে জয় পেলে পশ্চিম সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের শেষ অবস্থানটিতেও সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হবে। হাজার আল আসওয়াদ জেলার আইএস অবস্থানের দখল নেওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাওয়ার কথা জানিয়ে সিরিয়ার সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আইএস জঙ্গিদের এলাকা ছাড়ার সুযোগ দেওয়ার তথ্য অস্বীকার করেছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস দাবি করেছিল, জঙ্গিদের এলাকা ছাড়ার সুযোগ দিতে বাস পাঠানো হয়েছে ওই এলাকায়। syria damascus-5 14 18-afp 2

গত এপ্রিলে পূর্ব ঘৌটার বিদ্রোহীদের পরাজিত করার পর সিরিয়ার সরকারি বাহিনী আইএস নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাটি পুনর্দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, আল হাজার আল আসওয়াদ জেলার ওই এলাকাটি ইয়ারমুকের পাশে অবস্থিত। সিরিয়ায় আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের সবেচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির অবস্থিত সেখানে। একজন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করেছেন, আইএসের বিরুদ্ধে ওই যুদ্ধ এ বছরে সিরিয়ার সবচেয়ে কঠিন যুদ্ধগুলোর একটি। যুদ্ধে বিশাল পরিমাণে বিমান ব্যবহার করলেও আইএস জঙ্গিদের হামলায় সিরীয় বাহিনীরও প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সিরিয়ার সরকারি টিভিতে প্রচারিত সংবাদে বলা হয়েছে, হাজার আল আসওয়াদ এলাকার যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পথে।আইএস জঙ্গিরা হাজার আল আসওয়াদের বড় বড় ভবন থাকা এলাকাটিতে জড়ো হয়েছে। এখন সেদিকে যাত্রা করেছে সিরীয় বাহিনী। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস আগে জানিয়েছিল, এলাকাটিতে গভীর রাতে বাস ঢুকতে দেখা গেছে। তাদের ভাষ্য, আত্মসমর্পনে রাজি হওয়া আইএস জঙ্গিদের ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নিতেই বাসগুলো পাঠানো হয়েছিল। আইএস জঙ্গিদের নিয়ে বাসগুলো সিরিয়ার বাড়িয়ার দিকে গেছে। বাড়িয়া দামেস্কের পূর্বে অবস্থিত একটি জনমানবহীন এলাকা। এর সঙ্গে জর্ডান ও ইরাকের সীমান্ত রয়েছে। আইএস জঙ্গিদের নিরাপদে চলে যেতে দেওয়ার খবরের সত্যতা অস্বীকার করেছে সিরিয়া।

আত্মসমর্পনের সুযোগ দেওয়া সিরিয়া যুদ্ধে বেশ অনেকবার ঘটেছে। পূর্ব ঘৌটা থেকেও বিদ্রোহীদের পরিবারসহ চলে যেতে দিয়েছিল সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। আত্মসমর্পন করা বিদ্রোহীদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সিরিয়ার দক্ষিণপশ্চিম এলাকায় যেতে দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত দুই মাসের মধ্যে সিরিয়ার দক্ষিণপশ্চিম ও আলেপ্পোর দক্ষিণে বিদ্রোহীদের দখলে থাকা এলাকায় ১ লাখেরও বেশি মানুষকে পাঠানো হয়েছে। বিরোধীরা অভিযোগ জানিয়ে বলেছে, জনসংখ্যা বিন্যাসে পরিবর্তন এনে আসাদ সরকার বিদ্রোহ দমন করতে চাইছে। আসাদ সরকার ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, কাউকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়নি। যারা থাকতে চায় তাদেরকে রাষ্ট্রের আইন মেনে থাকতে হবে।