জরুরি অবস্থার মধ্যেই তুরস্কে ভোট আজ, পরীক্ষার মুখে এরদোয়ান

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আজ রবিবার। সেনাবাহিনীর একাংশের ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পর জারি হওয়া জরুরি অবস্থার মধ্যেই এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দেড় দশক আগে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান ও তার ইসলামি একে পার্টি ক্ষমতা গ্রহণের পর এই প্রথম বড় ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে পারেন।

Erdogan

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা আরও বাড়বে। ২০১৭ সালে সামান্য ব্যবধানে গণভোটের মধ্য দিয়ে এরদোয়ান প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বাড়িয়েছিলেন। সমালোচকরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে ন্যাটো সদস্য তুরস্কের গণতন্ত্রের অবনতি ও এক ব্যক্তির শাসন প্রতিষ্ঠা পেতে পারে।

আধুনিক তুর্কি ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতাদের একজন এরদোয়ান। একইসঙ্গে তাকে বিভেদসৃষ্টিকারী বলেও মনে করা হয়। ২০১৯ সালের নভেম্বরে এই নির্বাচন আয়োজনের কথা থাকলেও এরদোয়ান আগাম নির্বাচন ঘোষণা করেন। নির্বাচনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের নতুন ক্ষমতা দিয়ে তিনি দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা করতে পারবেন সহজে- এই যুক্তিতে আগাম নির্বাচন আয়োজন করছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি তুরস্ক, ইরাক ও সিরিয়ায় কুর্দি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে নতুন ক্ষমতা কাজে লাগাতে চান।

এবারের নির্বাচনে এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি সেক্যুলার রিপাবলিকান পিপল’স পার্টি (সিএইচপি) মুহারেম ইনজে। এবারের নির্বাচনি প্রচারণায় বেশ সফল হয়েছেন ইনজে। শনিবার ইস্তানবুলে আয়োজিত এক সমাবেশে দশ লাখের বেশি মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। ইনজে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এরদোয়ানের শাসনাধীনে তুরস্ক যে স্বৈরাচারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তা ঠেকিয়ে দেবেন।

এবারের নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা পাঁচ কোটি ৬৩ লাখ ২২ হাজার ৬৩২। স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। আইডি কার্ড বা যে কোনও শনাক্তকরণ নথি দেখিয়ে ভোট দিতে পারবেন ভোটাররা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুরস্কের প্রভাবের কারণে এ নির্বাচনে বিদেশি সাংবাদিকদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ থাকবে। ৩৪টি দেশের ৬০০-এর বেশি সাংবাদিক ভোটগ্রহণের খবর সংগ্রহ করবেন।

নির্বাচনে মোট আটটি রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এরদোয়ান ও ইনজে ছাড়া অপর প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা হচ্ছেন ইয়ি পার্টির মেরাল আকসেনার, কুর্দিদের সমর্থিত এইচডিপি’র সালাদিন দেমিরতাশ, ভাতান পার্টির ডোগু পেরিনজেক এবং সাদাত পার্টির তেমেল কারামুল্লাউলু।

পার্লামেন্ট নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নিচ্ছে বড় দুই দল। এরদোয়ানের একেপি’র নেতৃত্বাধীন ‘পিপলস অ্যালায়েন্স’ জোটে রয়েছে একে পার্টি, জাতীয়তাবাদী দল এমএইচপি এবং ইসলামি জাতীয়তাবাদী দল বুয়ুক বির্লিক পার্টি।

কামাল আতাতুর্কের দল সিএইচপি’র নেতৃত্বে ‘ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স’ জোটে রয়েছে সিএইচপি, ইয়ি পার্টি, ইসলামপন্থী দল সাদাত পার্টি এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টি।

জনমত জরিপে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ানের এগিয়ে থাকার আভাস মিলেছে। তবে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে তার দল ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট পার্টি (একেপি)।