ফিলিস্তিনি গ্রাম ধ্বংসের বিষয়ে ইসরায়েলকে আইসিসির হুঁশিয়ারি

‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের’ পক্ষে থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের বেদুইন গ্রাম খান আল আহমার ধ্বসের চেষ্টা করলে তা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। বুধবার আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি ফাতৌ বেনসুদার দেওয়া বিবৃতির ভাষ্য, ‘সামরিক প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও সম্পদের বড় রকমের ক্ষতিসাধন এবং জনবসতিকে এক স্থান থেক আরেক স্থানে সরে যেতে বাধ্য করা রোম বিধি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ।’ ইসরায়েলকে বেনসুদার হুঁশিয়ারির বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, প্রয়োজনে যেকোনও পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়েছে আইসিসি: ‘বিষয়টির প্রতি আমি সজাগ দৃষ্টি রাখছি এবং প্রয়োজনে পদক্ষেপ গ্রহণে পিছপা হব না।’খান আল আহমারে বেদুইনদের তাঁবু

খান আল আহমার গ্রামটিতে ১৭৩টি আল জাহালিন বেদুইন পরিবার বসবাস করে। তার নেগেভ মরুভূমিতে থাকত। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদেরকে সেখান থেকে উৎখাত করে। শরণার্থী হয়ে এখন তারা বাস করছে খান আল আহমারে। কিন্তু ইসরায়েল তাদেরকে বাসস্থান নির্মাণের অনুমতি দেয় না। ইসারেয়েলের যুক্তি, গ্রামটিতে বসতি স্থাপন করেছে অনেক দূর থেকে আসা লোকজন। আর ফিলিস্তিনিদের দাবি, খান আল আহমার থেকে বেদুইন পরিবারগুলোকে উৎখাতের উদ্দেশ্য পশ্চিম তীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ বাড়িয়ে চলা।

খান আল আহমারের ধ্বংসের বিষয়ে ইসরায়েলি আদালতে আপিল করা হয়েছিল। কিন্তু দেশটির সুপ্রিম কোর্ট আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেছিল, ১ অক্টোবরের মধ্যে বেদুইনদের  নিজেদের ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলতে হবে তা না হলে তাদেরকে বলপূর্বক ওই স্থান থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। গত বৃহস্পতিবার গ্রামটিতে বিপুল পরিমাণ সেনা সদস্য মোতায়েন করেছে ইসরায়েল। স্থানীয়দের ধারণা,  ৩০ ব্যাটেলিয়ন সেনা রয়েছে সেখানে। ইসরায়েলি প্রশাসনের যে কর্মকর্তা অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূমি নিয়ে কাজ করেন তাকে ওই অঞ্চলে ম্যাপ হাতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা বিটিসেলেম জানিয়েছে, অভিবাসী ইহুদি ও ইসরায়েলি সরকার খান আল আহমারের বাসিন্দাদের জীবনযাপন কষ্টসাধ্য করে তোলার মাধ্যমে তাদেরকে ওই এলাকা ত্যাগে বাধ্য করতে চাইছে। যদি তারা এতে সফল হয় তাহলে এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন ঘটাবে এবং যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। বিটি সেলেমের ভাষ্য, ‘যারা এ পরিস্থিতি তৈরি করছেন তার ব্যক্তিগতভাবে এর জন্য যে দায়ী থাকবেন তা নয় শুধু, যারা এর আইনি ভিত্তি তৈরি করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তারাও এর জন্য দায়ী হবেন।

খান আল আহমারে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি পুলিশ