মিসরে ৪০ মানবাধিকার কর্মীকে তুলে নিয়ে গেছে সরকার

রবিবার (১৮ নভেম্বর) মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ (এইচআরডব্লিউ) জানিয়েছে, মাসখানেক সময়ের মধ্যে অন্তত ৪০ জন মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীকে তুলে নিয়ে গেছে মিসরের সরকারি বাহিনী। তাদের কোথায় রাখা হয়েছে তা অজানা। সংস্থাটি মিসর সরকারের কাছে আটক মানবাধিকার কর্মীদের তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদ পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা মিডিল ইস্ট আই লিখেছে, তুলে নিয়ে যাওয়া ৪০ জনের বিষয়ে এইচআরডব্লিউ সুস্পষ্ট তথ্য পেলেও বিভিন্ন সূত্র সংস্থাটিকে প্রায় ৮০ জনের আটক হওয়ার খবর দিয়েছে।abdelmonem-court

গ্রেফতার করে অজানা স্থানে আটক রাখা ব্যক্তিদের স্বজনদের সঙ্গে সরাসরিই যোগাযোগ রাখেন এমন একজন আইনজীবী, একজন মানবাধিকার কর্মী ও দুই জন আইনজীবী এইচআরডব্লিউকে নিশ্চিত করেছে, আটক হওয়া ব্যাক্তিদের অনেকেই বিরুদ্ধ রাজনৈতিক মতের বন্দিদের মানবিক ও আইনি সহায়তা দিয়ে আসছিলেন। এইচআরডব্লিউয়ের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক উপ-পরিচালক মাইকেল পেজ বলেছেন, ‘যারা নিখোঁজ ব্যক্তিদের রক্ষার চেষ্টা করছিলেন মিসরের নিরাপত্তা বাহিনীর কারণে এখন তারাই হুমকির মুখে পড়েছেন। মিসরের উচিত গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করা এবং মানবাধিকারের জন্য কাজ করার ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়া।’

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ‘ইজিপসিয়ান কো-অর্ডিনেশন ফর রাইটস অ্যান্ড ফ্রিডম’ নামক সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সরকার সমর্থক সংবাদপত্রগুলোতে ওই সংস্থাটিকে নিয়ে সম্প্রতি বেশ সমালোচনা হয়েছে।

গ্রেফতাকৃতদের একজন হুদা আব্দেলমোনেইম (৬০)। তাকে রাত দেঢ়টার সময় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তার মেয়ে অভিযোগ করেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তার মাকে নিয়ে যাওয়ার সময় চোখ বেঁধে ফেলে। ওষুধগুলোও সঙ্গে নিয়ে যেতে দেয়নি। আব্দেল মোনেইম, ‘রেভ্যুলেশনারি কোয়ালিশন অব ইজিপসিয়ান ওমেন’ নামক সংস্থার সাবেক মুখপাত্র। সংস্থাটির বিরুদ্ধে মুসলিম ব্রাদারহুডের ঘনিষ্ঠ।

এমন আরেকজন হচ্ছেন সোমায়া নাসেফ (৩৪)। তার স্বামী রামি দারবিস মিডিল ইস্ট আইকে জানিয়েছেন, সোমায়াকে বাসায় ফেরত যাওয়ার সময় রাস্তা থেকেই তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি একজন মানবাধিকার আইনজীবী। দারবিসের ভাষ্য, ‘সোমায়া তার কাজের জন্য মিসর সরকারের কাছে ভালোভাবেই পরিচিত। তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলেও সরকার তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দাখিল করতে পারেনি।’