ফ্রান্সের আদলে বিক্ষোভের আশঙ্কায় মিসরে 'হলুদ ভেস্ট' বিক্রি নিষিদ্ধ

ফ্রান্সের আদলে বিক্ষোভের আশঙ্কায় হলুদ ভেস্ট বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে মিসর। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, ২০১১ সালে হোসনি মোবারককে উৎখাতের বার্ষিকীতে ফ্রান্সের মতো বিক্ষোভ শুরু হতে পারে দেশটিতে। এই আশঙ্কা থেকেই হলুদ ভেস্ট বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

3704


নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও খুচরো বিক্রেতারা জানান, শিল্পকাজের নিরাপত্তা সরঞ্জাম বিক্রিকারীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হলুদ ভেস্ট খুচরো বিক্রি না করতে। শুধু প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির কাছে পুলিশি অনুমোদনের পরই বিক্রি করা যাবে। যারা এই নির্দেশ অমান্য করবে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে।
কায়রোর উপকণ্ঠে এধরনের সরঞ্জাম বিক্রয়কারী ছয়জন জানান, তারা এখন আর হলুদ ভেস্ট বিক্রি করছেন না। দুই বিক্রেতা এগুলো বিক্রিতে অস্বীকৃতি জানান এবং চারজন জানান পুলিশ তাদের বিক্রি করতে নিষেধ করেননি। এই বিক্রেতারা ভয়ে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি।
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
অর্থনৈতিক সংকট এবং জ্বালানির ওপর কর বাড়ানোর প্রতিবাদে গত ১৭ নভেম্বর থেকে ফ্রান্সে আন্দোলন শুরু হয়। ধীরে ধীরে সে আন্দোলন সরকারবিরোধী তথা পুঁজিবাদবিরোধী ‘হলুদ ভেস্ট’ আন্দোলনে রূপ নেয়। গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ফ্রান্সের নিরাপত্তা বাহিনীর নজিরবিহীন সংঘর্ষ হয় যার ফলে অন্তত চারজন নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হয়। গ্রেফতার করা হয় সহস্রাধিক বিক্ষোভকারীকে। দেশজুড়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে এমন অস্থিরতার মধ্যেই সোমবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
জ্বালানির কর বৃদ্ধি ও জীবন যাপনের ক্ষেত্রে উচ্চ মূল্যসহ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদ জানাতে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ ফ্রান্সের ইতিহাসে গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। ১ ডিসেম্বর প্যারিসের রাস্তায় কয়েক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা হতে দেখা গেছে। সহিংসতায় প্রাণহানিও হয়। তুমুল বিক্ষোভের মুখে ফ্রান্স সরকার জ্বালানি কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করলেও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অসন্তোষ রয়ে যায়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ববিহীন ইয়েলো ভেস্ট বিক্ষোভকারীরা সরকারের কাছে ন্যুনতম পেনশন, কর ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন, অবসরের বয়সসীমা কমানোসহ ৪০টিরও বেশি দাবি তুলে ধরে।