লেবাননে শীত, ঝড় ও বন্যায় চরম দুর্ভোগে সিরীয় শরণার্থীরা

লেবাননে আশ্রয় নেওয়া সিরীয় শরণার্থীরা প্রলয়ঙ্করী ঝড়ে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে দমকা হাওয়া, টানা বৃষ্টি, তুষারপাত ও বরফ শীতল তাপমাত্রার মধ্যে রয়েছেন অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া কয়েক হাজার সিরীয়। অস্থায়ী শিবিরে পানি ওঠে যাওয়ায় অনেকেই অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট এখবর জানিয়েছে।

Lebanon-storm-refugee-camp-15

লেবাননজুড়ে ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি সিরীয় শরণার্থী অবস্থান করছেন। তারা বাস করছেন অস্থায়ী শিবিরে। শরণার্থীদের বাসস্থান বড় ধরনের ঝড়ে ঠিকে থাকার মতো নয়। 

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অন্তত ১১ হাজার সিরীয় শরণার্থী চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ১৫টির বেশি শিবির পুরোপুরি বন্যা আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। সীমান্ত শহর আরসালে একটি শিবির তুষারে একেবারে ঢেকে গেছে। তাঁবু বাধ্য হয়ে শরণার্থীরা কাপড় পুড়িয়ে নিজেদের উষ্ণ রাখার চেষ্টা করছেন। পশ্চিমের শহর মিনিয়ে হতে ঝড়ের তাণ্ডবে নদীতে পড়ে গিয়ে ৮ বছরের এক মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।

Lebanon-storm-refugee-camp-3

সেভ দ্য চিলড্রেন-এর লেবাননের পরিচালক অ্যালিসন জেলকোভিৎজ বলেন, যখন আমরা নিজেদের ঘর উষ্ণ রাখতে পছন্দ করছি তখন বরফ শীতল আবহাওয়া থাকা কয়েক শরণার্থী ও তাদের পরিবারের দুর্ভোগ ও বেঁচে থাকার সংগ্রামের কথা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যালিসন আরও বলেন, ভারি বর্ষণে তাদের মাথার উপর ছাদ ধসে পড়ার অক্ষোয় তারা। তাদের তাঁবুর কোনে পানি জমে আছে। স্বল্পতম সময়ের জন্যও এমন পরিস্থিতিতে কেউ থাকতে চাইবে না।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট বুধবার সিরীয় শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মাইকেল আউন বলেন, আমাদের দেশের ছোট আয়তন ও অবকাঠামো এবং সীমিত সামর্থ্যের কারণে এতো বেশি সংখ্যক শরণার্থীদের ধারণ করা কঠিন। শরণার্থী সংকট আমাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তার বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে।

লেবাননের সরকার জানিয়েছে, ২০১৮ সালে কয়েক হাজার শরণার্থী সিরিয়া ফিরে গেছেন। জাতিসংঘের মতে, এই বছরে আড়াই লাখ সিরীয় দেশে ফিরে যেতে পারেন। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে,  অনেক সিরীয়রা দেশে ফিরে বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবিলার চাইতে শীতের তীব্রতায় দুর্ভোগের পরও লেবাননে থাকতে চাইবেন।