আজারবাইজানের কাছে ‘আত্মঘাতী হামলাকারী ড্রোন’ বিক্রি ইসরায়েলের

ইসরায়েলের একটি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিশেষ ধরনের ড্রোনের প্রথম চালান বিক্রি করেছে মধ্য এশিয়ার দেশ আজারবাইজানের কাছে। লক্ষ্যবস্তুর অপর আছরে পরে ধ্বংস করার সক্ষমতা থাকার কারণে একে ডাকা হচ্ছে ‘সুইসাইড ড্রোন’ নামে। এই ড্রোনটি ১০ কেজি ওজনের বোমা বহনে সক্ষম। ড্রোনটির ওড়ার গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৮৫ কিলোমিটার। আর আছড়ে পড়ে আঘাত হানার গতি ঘণ্টায় ৫৫৫ কিলোমিটারেরও বেশি। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা মিডিল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এলবিট ডিফেন্সের ড্রোনগুলো কেনা হয়েছে আজারবাইজানের ‘স্টেট বর্ডার সার্ভিসের’ জন্য।suicide-drone18921915_10203371952694936_2493460817266903810_n

আনুষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্ট ড্রোনটির নাম ‘স্কাই স্ট্রাইকার।’ কিন্তু লক্ষ্যবস্তুতে আছড়ে পড়ে ধ্বংস করার বৈশিষ্ট্য থাকায় এই ড্রোনকে আত্মঘাতী হামলাকারী ড্রোন না ‘কামিকাজি ড্রোন’ নামে ডাকছেন সংশ্লিষ্টরা। জেরুজালেম পোস্টের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ড্রোনটি ছয় মিনিটে ২০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে সক্ষম। উড়তে থাকা অবস্থাতেই ড্রোনটি লক্ষ্যবস্তুর অবস্থান চিহ্নিত করতে পারে। একটানা উড়তে পারে দুই ঘণ্টা। নিয়ন্ত্রণকারী চাইলে ড্রোনটি ঘণ্টায় ৫৫৫ দশমিক ছয় কিলোমিটার গতিতে লক্ষ্যবস্তুতে আছড়ে পড়তে পারে সেটিকে ধ্বংস করার জন্য।

আজারবাইজানের ওয়েবসাইট আজেরিডিফেন্সের বরাতে সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, অন্তত দশটি ‘স্কাই স্ট্রাইকার’ কেনার কথা জানিয়েছে আজারবাইজান। ড্রোনগুলো কিনে আজারবাইজানের ‘স্টেট বর্ডার সার্ভিস’ উপস্থাপন করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের কাছে। সেই সভবি প্রকাশিত হয়েছে আজেরিডিফেন্সে।

মিডিল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, এই প্রথমবারে মতো এলবিট ডিফেন্সের সুইসাইড ড্রোন কিনলেও, আগে থেকেই আজারবাইজান ইসরায়েলের কাছ সামরিক সরঞ্জাম কেনে। বস্তুত, আজারবাইজান ইসরায়েলি সামরিক সরঞ্জামের তৃতীয় বৃহত্তম ক্রেতা। গত ডিসেম্বরে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আজারবাইজান সফরের সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ জানিয়েছিলেন, তখন পর্যন্ত ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে তারা ৫০০ কোটি ডলারের সামরিক সরঞ্জাম কিনেছেন।

মধ্য এশিয়ার দেশ আজাবাইজান একই সঙ্গে আর্মেনিয়া ও ইরানের প্রতিবেশী। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি ইসরায়েলের কাছে অপরিশোধিত তেল বিক্রি করে আসছে। অন্যদিকে ইসরায়েল বিক্রি করছে অস্ত্র। প্রতিবেশী আরমেনিয়ার সঙ্গে আজারবাইজানের দ্বন্দ্ব রয়েছে। ২০১৬ সালে আঈমেনিয়দের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ানোর প্রেক্ষিতে আজারবাইজান ইসরায়েলি ড্রোন ব্যবহার করেছিল। ওই যুদ্ধে সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে সহায়তা দিচ্ছিল আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী।

এর আগেও এমন ড্রোন কেনার বিষয়ে বিতর্কিত ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল সংশ্লিষ্টদের। আজারবাইজানের কর্মকর্তারা ইসার‍্যেলি প্রতিষ্ঠানকে একটি আর্মেনীয় সেনা অবস্থানের ওপর ড্রোন হামলা চালিয়ে নমুনা দেখানোর দাবি জানিয়েছিলেন। এই ঘটনা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের রফতানি অনুমতি বাতিল করে দিয়েছিল ইসরায়েল।