নারীদের অকথ্য নির্যাতনের অভিযোগ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে

সৌদি আরবে গ্রেফতার করা আট নারী অধিকার কর্মীর ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর অভিযোগ সত্য বলে মনে করে যুক্তরাজ্যের সংশ্লিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি। ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের দ্বারা গঠিত তিন সদস্যের কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, এসব নারীদের মারধরের পাশাপাশি ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন ব্রিটিশ তদন্ত কমিটির সদস্যরা। কিন্তু সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের হাতেই এখন সৌদি আরবের প্রকৃত ক্ষমতা, উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ভুক্তভোগীদের ওপর চালানো নির্যাতনের বিষয়ে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যরা সৌদি আরবের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদেরই দায়ি করেছেন।TELEMMGLPICT000144558052_trans_NvBQzQNjv4BqbGGFpKb0ZSkVWHuPGASy6uOsOjoPmMm2gdTnmifqMAI
কমিটিতে রয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির ক্রিস্পিন ব্লান্ট, লিবারেল ডেমোক্র্যাট এমপি লায়লা মোরান ও লেবার পার্টির পল উইলিয়ামস। তাদের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, গত বসন্তে সংশ্লিষ্ট নারী অধিকার কর্মীদের আটক করা হয়েছিল। তারপর তাদেরকে অকথ্য নির্যাতন করেছে সৌদি আরব। তাদেরকে ঘুমাতে দেওয়া হতো না। মারধর করা হতো। মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হতো। এমন নির্যাতন চালানো হয়েছে যে যথাযথ চিকিৎসা না পেলে তাদের দীর্ঘ মেয়াদি অসুস্থতা দেখা দিতে পারে।
ব্লান্ট বলেছেন, ‘যেসব সৌদি নারী অধিকারকর্মীকে আটক করে রাখা হয়েছে তাদের ওপর চালানো হয়েছে অকথ্য নির্যাতন। তাদেরকে চিকিৎসা পেতে দেওয়া হয়নি। আইনি সহায়তা পেতে দেওয়া হয়নি। এমন কি, দেখা করতে দেওয়া হয়নি স্বজনদের সঙ্গেও। তাদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে এবং তাদেরকে যেভাবে কারাবন্দি রাখা হয়েছে তা নির্যাতনের আন্তর্জাতিক সংজ্ঞার আওতাতেই পড়ে। সৌদি আরব একবারে প্রান্তে এসে পড়েছে। এখনও চাইলে তারা তাদের গতিমুখ পাল্টাতে পারে। তা না হলে তারা সোজা বিপর্যয়ের মধ্যে পতিত হবে, যা সংশ্লিষ্ট তিন নারীকে আটক ও নির্যাতনের ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে।’
লিবারেল ডেমোক্র্যাট এমপি লায়লা মোরান মন্তব্য করেছেন, ‘আমি যখন তাদের গ্রেফতারির কথা শুনেছিলাম, তখন অন্য সবার মতোই বিস্মিত হয়েছিলাম। নির্যাতন তো বটেই সেই সঙ্গে তাদেরকে যৌন হয়রানি করা ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার যেসব অভিযোগ জানা গেছে, সেসব অমার্জনীয়।’
আটক নারীদের প্রতি হওয়া সহিংসতায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চমকে উঠেছে, উল্লেখ করে লেবার এমপি পল উইলিয়ামস বলেছেন, ‘আমরা আমাদের তদন্তে যা পেয়েছি তা সৌদি আরবের সঙ্গে বিনিময় করতে আগ্রহী। আমরা চাই তারা আমাদের সংশ্লিষ্ট নারীদের বিষয়ে পাওয়া অভিযোগের বিষয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করতে দিতে, যাতে আমরা মিলিয়ে দেখতে পারি আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক কি না।’
দেশটির মানবাধিকার কমিশনের সুযোগ আছে উপস্থাপিত অভিযোগগুলোর বিষয়ে তদন্ত করে দেখার। কিন্তু তাদের ভূমিকাকে সন্দেহের চোখে দেখে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। সৌদি আরব অভিযোগের বিষয়ে সাধারণত এ কথাই বলে যে তারা কোনও রাজনৈতিক বন্দিকে আটক করে রাখেনি। কোনও নির্যাতনও তারা করে না। কমিটির পক্ষ থেকে আটক আট নারীর অবস্থা পর্যবেক্ষণের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সৌদি আরবের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।