সাদ্দামের মেয়েকে ফিরিয়ে দিতে জর্ডানকে ইরাকের চাপ

ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে রাঘাদ সাদ্দাম হোসেনকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জর্ডানকে চাপ দিচ্ছে বাগদাদ। জর্ডানে অবস্থানরত যে কয়জন ইরাকিকে ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে ইরাকি পার্লামেন্ট, তাদের মধ্যে এই বিরোধী দলীয় নেতা রয়েছেন। ‘ওকাজ’ নামে সৌদি আরবের একটি পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট মনিটর।

Raghad-Hussein15032090_1194010604013823_6655780608933261251_n

ইরাকের সরকারি সূত্র ওই পত্রিকাকে জানিয়েছে, পার্লামেন্টে রাজনৈতিক ব্লক হিসেবে সংকটে পড়েছেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদি। জর্ডানে অবস্থানরত সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে রাঘাদসহ বিরোধী দলীয় কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিচ্ছেন তারা। জর্ডানে বসবাসরত সাদ্দামের পঞ্চম মেয়ে ও অন্য ইরাকিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন করার অভিযোগ করছে ইরাক সরকার।

ওকাজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জর্ডান এটাকে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করার পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। বাগদাদের চাওয়া ব্যক্তিদের আত্মসমর্পন করানোর জন্য সরকারি প্রচেষ্টাকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ বা হুমকি হিসেবে নিয়েছে তারা। এরই মধ্যে ‘রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বকে লক্ষ্যবস্তু করে এমন রাজনৈতিক ব্ল্যাকমেইল প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান’ করেছে জর্ডান।

জর্ডানের সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে ওই পত্রিকা বলছে, ‘জর্ডানে প্রায় পাঁচ লাখ ইরাকি থাকার পরও মাথা নত করবে না আম্মান।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরাকের পার্লামেন্টের ওই রাজনৈতিক পক্ষ চাপ দিয়ে জর্ডানে বসবাসরত ইরাকিদের ইস্যুটিকে দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করছে। তবে এই সংযোগ ইরাক ও তার প্রতিবেশীদের মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট করবে বলে সংযোগ স্থাপনে অস্বীকৃতি জানিয়েছে সরকার।

উল্লেখ্য,  ব্যাপক মানববিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগ তুলে ২০০৩ সালে ইরাকে হামলা চালায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট। হামলায় ক্ষমতাচ্যুত হন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন। পরে মার্কিন বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার পর ইরাকের আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি। নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় সাদ্দামের রাজনৈতিক দল বাথ পার্টিকে। ইরাকে মার্কিন হামলার মধ্যে প্রতিরোধ যুদ্ধে নিহত হন সাদ্দামের দুই ছেলে। যুদ্ধের একপর্যায়ে ইরাক ছেড়ে পালিয়ে যান মেয়ে রাঘাদ হোসেনসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। বাথ পার্টিকে সহায়তার অভিযোগে ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল রাঘাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।