সৌদি আরবে শিয়া নেতার শিরশ্ছেদে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ক্ষোভ

সৌদি আরবে শিয়াদের ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল-নিমর-এর শিরশ্ছেদের প্রতিবাদে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছে। ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের ধর্মীয় নেতারা এ শিরশ্ছেদের সমালোচনা করে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

noname

ইরান, ইয়েমেন ও লেবাননের ধর্মীয় নেতা ও কাউন্সিলের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, নিমর আল-নিমরের শিরশ্ছেদে অত্র অঞ্চলে ব্যাপক আকারে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হোসেই জাবে আনসারী সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, শিয়া নেতা নিমর আল নিমরকে হত্যার জন্য সৌদি আরবকে ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে।

আর ইরানের অন্যতম শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আহমাদ খাতামি বলেছেন, এ শিরশ্ছেদের ফলে সৌদি আরবের ক্ষমতাসীন পরিবারের পতন হবে। সৌদ পরিবারকে ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে খাতামি আরও বলেন, ‘আমার কোনও সন্দেহ নেই, এই খাঁটি রক্ত সৌদ পরিবারে ধস নামাবে এবং ইতিহাসের পাতা থেকে তাদের সরিয়ে দেবে।’

noname

বাহরাইনে শিরশ্ছেদের প্রতিবাদে বিক্ষোভে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে।  ইয়েমেনের রাজধানী মানামাতে এ বিক্ষোভ করে স্থানীয় জনগণ।

লেবাননের সর্বোচ্চ শিয়া কাউন্সিল এটাকে ‘মারাত্মক ভুল’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। আর ইয়েমেনের হুথি আন্দোলনকারীরা শিরশ্ছেদকে ‘মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

noname

এর আগে শনিবার সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে একদিনে ৪৭ জনের শিরশ্ছেদের ঘোষণা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে শিয়া ধর্ম প্রচারক নিমার আল নিমার ও আল-কায়েদা কমান্ডার ফারিস বিন সোয়েইল রয়েছেন।  ফাঁসি কার্যকর হওয়াদের মধ্যে একজন মিসরীয় ও একজন কানাডিয়ান নাগরিকও রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছিলো। অভিযুক্তরা বিভিন্ন আবাসিক এলাকা ও সরকারি ভবনে হামলা ও হামলার পরিকল্পনার সাথে জড়িত ছিল বলে দাবি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

উল্লেখ্য, সৌদি আরবে ২০১৫ সালে সর্বমোট ১৫৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। দুই দশকের মধ্যে এটিই দেশটিতে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, এর মধ্যে প্রথম একশ’ জনের ৫৬ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে মাদক সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায়। নভেম্বর মাসে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল গত বছর সৌদিতে অন্তত ৬৩ জনকে মাদক সংক্রান্ত মামলায় ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, আল-জাজিরা।

/এএ/