পারমাণবিক বোমা তৈরিতে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো ইরান

চুক্তি ভেঙে পারমাণবিক বোমা তৈরির পথে আরও এক পদক্ষেপ এগিয়ে গেলো ইরান। শনিবার আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ উসকে তেজস্ক্রিয় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ শুরু করার কথা তেহরান। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এখবর জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রে ১৬৪ আইআর-৬ সেন্ট্রিফিউজ-এর বাক্সগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞানীদের হাতে তুলে দেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।

এই পদার্থ ও ইউরেনিয়ামের সংযোগে যেমন বিদ্যুৎ তৈরি করা যায়, তেমনি পারমাণবিক অস্ত্রও বানানো যায়।

গত মঙ্গলবার অন্যান্য আন্তর্জাতিক পক্ষের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসে ইরান। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে ফের চুক্তিতে অংশীদার করা নিয়ে আলোচনা হয়। এমন সময়ে সরাসরি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ শুরু হওয়ায় তেহরানের উদ্দেশ্য নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বে।

ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের দৌড়ে শামিল হলে মধ্যপ্রাচ্যে সমীকরণ সম্পূর্ণ পালটে যাবে বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি এর আগে জানিয়েছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ খাতে সবচেয়ে বড় সাফল্য হচ্ছে আইআর -৯ সেন্ট্রিফিউজের মেকানিক্যাল পরীক্ষা। এটি ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেন্ট্রিফিজউজ। এটি ইরানিরা নিজস্ব পদ্ধতিতে তৈরি করেছেন এবং তা ভালো কাজ করছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য-যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ইরান। সেটির শর্ত মতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত থাকে দেশটি। বিপরীতে তেহরানের ওপর থেকে বেশ কিছু আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় যুক্তরাষ্ট্রসহ চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলো। কিন্তু ২০১৮ সালে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টার অভিযোগ এনে চুক্তি থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে যায় ওয়াশিংটন।

তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনায় সরব হয় ইরান। তবে গতবছর মার্কিন মসনদ জো বাইডেনের দখলের যাওয়ায় ফের চুক্তিটিতে যুক্তরাষ্ট্রের শামিল হওয়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু এবার ইরানের এমন পদক্ষেপে সেই সম্ভাবনায় আপাতত সংশয়ী বিশ্লেষকরা।