নাশকতা ও নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের হুঁশিয়ারি

নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রে নাশকতা ও নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরে আসার আলোচনায় কোনও সুবিধা পাবে না বলে সতর্ক করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। মঙ্গলবার তিনি এই হুঁশিয়ারির কথা জানিয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।

রাজধানী তেহরানে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের পাশে দাঁড়িয়ে জাভেদ জারিফ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির সব একতরফা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ইরান পারমাণবিক চুক্তি সম্পূর্ণ মেনে চলবে।

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিন্তু মার্কিনীদের জানা উচিত যে, নিষেধাজ্ঞা বা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড আলোচনায় তাদের হাতিয়ার হতে পারবে না এবং এসব কর্মকাণ্ড তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল করবে।

এর আগে সোমবার ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থোনিও গুতেরেসকে লেখা একটি চিঠিতে বলেছেন, তার দেশের নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায় যে অন্তর্ঘাতমূলক হামলা চালানো হয়েছে তা যুদ্ধাপরাধের শামিল। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, এই হামলায় আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএ’র তত্ত্বাবধানে থাকা একটি স্থাপনাকে টার্গেট করা হয়েছে।

জারিফ কয়েকটি টুইটার বার্তায় ওই চিঠির মূল বিষয়বস্তু প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আইএইএ’র তত্ত্বাবধানে থাকা পরমাণু স্থাপনাটিতে হামলার ফলে সেখান থেকে পারমাণবিক নিঃসরণ ছড়িয়ে পড়তে পারত যা পরমাণু সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধাপরাধের শামিল।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি এই অর্থহীন জুয়া খেলার ক্ষতিকর প্রভাব ঠেকাতে চায় তাহলে তাকে অবিলম্বে তেহরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসতে হবে।

গুতেরেসকে লেখা চিঠিতে জারিফ আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কার্যকরভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে ইরানও তার প্রতিশ্রুতিতে ফিরে যাবে। তা না হলে নাতাঞ্জে যে হামলা হয়েছে তার জের ধরে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচির গতি বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে।

উল্লেখ্য, রবিবার সকালে ইরানের নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় গোলযোগ দেখা দেয়। ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান আলী আকবর সালেহি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, তার দেশের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ব্যবস্থায় যে হামলা হয়েছে তা থেকে বোঝা যায় পরমাণু শিল্পে ইরানের চোখধাঁধানো সাফল্য অনেকে সহ্য করতে পারছে না।

এর আগেও ইরান অভিযোগ করেছে, নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যৌথভাবে সাইবার হামলা চালিয়েছে।