গাজায় ইসরায়েলি হামলায় যুদ্ধাপরাধ হয়ে থাকতে পারে: জাতিসংঘ

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল নির্বিচার হামলা চালিয়েছে তা দেখা গেলে সেটি যুদ্ধাপরাধ হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের বিশেষ অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) পক্ষে পাকিস্তান এবং ফিলিস্তিনের অনুরোধে এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় টানা ১১ দিন ধরে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়। ধ্বংস হয়ে যায় গাজার বেশ কয়েকটি ভবন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত ভবন ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। ইসরায়েলের দাবি, এসব ভবন স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গ্রুপ হামাসের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হতো। আর হামাসের সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে চালানো হামলায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিরা হতাহত হয়ে থাকতে পারে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানে ক্ষতিগ্রস্ত গাজার বেসামরিক ভবনগুলো সামরিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার হয়েছে এমন কোনও প্রমাণ তিনি দেখতে পাননি। তিনি বলেন, ‘যদি দেখা যায় নির্বিচার হয়েছে, তাহলে এ ধরনের হামলা যুদ্ধাপরাধ বলে বিবেচিত হতে পারে।’ এছাড়া গাজার শাসক দল হামাসকেও তিনি ইসরায়েলে নির্বিচারে রকেট হামলা বন্ধ রাখার আহ্বান জানান।

১৪ বছর ধরে ইসরায়েলি অবরোধের কবলে থাকা গাজায় ধ্বংসযজ্ঞের কথা উল্লেখ করে মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, ‘যদিও সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং তাদের সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলার কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু ইসরায়েলি হামলায় বহু বেসামরিক মৃত্যু ও আহতের পাশাপাশি বেসামরিক স্থাপনার ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’ তিনি বলেন, গাজার সরকারি ভবন, আবাসিক বাড়ি, আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা, চিকিৎসা অবকাঠামো, সংবাদমাধ্যমের কার্যালয় আক্রান্ত হয়েছে। ব্যাচেলেট বলেন, ‘এসব ভবনে সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে বলে ইসরায়েল দাবি করলেও আমরা এ বিষয়ে কোনও প্রমাণ দেখতে পাইনি।’

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, ‘নিঃসন্দেহে ইসরায়েলের নিজেদের নাগরিক এবং বাসিন্দাদের রক্ষার অধিকার রয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদেরও অধিকার আছে। সেই একই অধিকার।’