ইসরায়েলে নেতানিয়াহু যুগের অবসান হচ্ছে?

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিরোধীদের সরকার পরিবর্তনের উদ্যোগ ঠেকাতে রবিবার মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছেন। দেশটির সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, যদি বিরোধীরা সরকার গঠনের সমঝোতায় পৌঁছে যায়, তাহলে ইসরায়েলে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা নেতানিয়াহুকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়তে হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরকার গঠনে বিরোধী দলের প্রধান ইয়ার লাপিডকে বেঁধে দেওয়া সময় বুধবার শেষ হবে। লাপিড দেশটির ডানপন্থী, মধ্যপন্থী ও বামপন্থীদের সঙ্গে জোট গঠনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন। গত দুই বছরে চারটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ইসরায়েলে। এবার লাপিড ব্যর্থ হলে আবারও নির্বাচনে যেতে হবে দেশটিকে।

লাপিডের সরকার গঠনের বিষয়টি প্রধানত নির্ভর করছে চরম ডানপন্থী রাজনীতিক নাফতালি বেনেটের ওপর। কিংমেকার বলে পরিচিত এই নেতার দল ইয়ামিনা পার্টির পার্লামেন্টে ছয়টি আসন রয়েছে।

বেনেট রবিবার তার সিদ্ধান্তের কথা জানানোর কথা। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, লাপিডের মধ্যপন্থী ইয়েশ আতিদ পার্টির সঙ্গে বেনেটের জোট গঠনে রাজি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু বেনেটকে আগে নিজ দলের নেতাদের রাজি করাতে হবে।

২৩ মার্চের নির্বাচনে কোনও দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় বেনেটের দলটিতে ঐক্য ভঙ্গুর হতে পারে। বিশেষ করে জোট গঠনে লাপিড পার্লামেন্টের আরব সদস্যদের জোটে নিতে চাচ্ছেন, যাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বেনেটের দলের বিপরীত।

গত কয়েক দিন ধরে প্রকাশ্যে কথা বলেননি বেনেট। কিন্তু ইসরায়েলের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লাপিড জোট গড়ে সরকার গঠনের পথেই হাঁটবেন। সম্ভাব্য সমঝোতার আশঙ্কায় নেতানিয়াহু রবিবার শেষ চেষ্টায় নেমেছেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, টানা ১২ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার পর তার কিছু দিন বিরতি নেওয়া প্রয়োজন।

তার নেতৃত্বাধীন জোটের নেতাদের সঙ্গে একটি প্রস্তাবে তিনি পালাক্রমে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব দিয়েছেন। নেতানিয়াহুর প্রস্তাব অনুসারে, ডানপন্থী নিউ হরাইজন পার্টির প্রধান গিডিও সার ১৫ মাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী হবেন। এরপর দুই বছরের জন্য নেতানিয়াহু এবং পরে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বেনেট হবেন প্রধানমন্ত্রী।

লিকুড পার্টির সাবেক মন্ত্রী সার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। টুইটারে তিনি লিখেছেন, নেতানিয়াহুর শাসন অবসানে আমাদের অবস্থান ও প্রতিশ্রুতি বদলায়নি।

এ বিষয়ে বেনেটের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সাবেক এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী এর আগেও নেতানিয়াহুকে উৎখাতের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন।