আইএইএ প্রধানকে আমন্ত্রণ ইরানের

জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক সংস্থা আইএইএ-এর প্রধান গ্রসিকে আলোচনার জন্য তেহরানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইরান। এর আগে ইরানের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তারা আর কোনও আলোচনা করছে না। পরমাণু কেন্দ্রের ফুটেজ পাঠানোও বন্ধ করে দিয়েছে। তাই পরমাণু চুক্তি নিয়ে ভিয়েনাতে আলোচনায় বসার আগে আইএইএ প্রধানকে তেহরানে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।

তেহরান জানিয়েছে, পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্যই গ্রসিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘গ্রসিকে আমরা তেহরানে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তার সঙ্গে কথা বলে কবে তিনি আসবেন তা ঠিক করা হবে। তবে তিনি কিছু দিনের মধ্যেই আসবেন বলে আমার মনে হয়।’

কয়েক দিন আগেই আইএইএ প্রধান বলেছিলেন, ইরান তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখায় তিনি অবাক হয়েছেন। গ্রসি শেষবার ইরান গেছিলেন গত সেপ্টেম্বরে। সেই সফরের সময় তিনি তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ফুটেজ দেখেছিলেন। তারপর আইএইএ অভিযোগ করেছিল, ইরান আর তাদের পরমাণু কেন্দ্রের ফুটেজ পাঠাচ্ছে না। অঘোষিত স্থানে তেহরান কেন ইউরেনিয়াম জমা করেছে তার ব্যাখ্যাও চেয়েছিল তারা।

তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি এবং সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য না দেওয়া নিয়েই আইএইএ অখুশি। এখন আবার পরমাণু চুক্তিতে ফেরা নিয়ে ইরানের সঙ্গে চুক্তিতে স্বাক্ষর করা দেশগুলোর আলোচনা শুরু হতে চলেছে। আগামী ২৯ নভেম্বর ভিয়েনাতে এই আলোচনা হবে। তার আগেই সম্ভবত আইএইএ প্রধান তেহরান যাবেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ইউরোপের নেতাদের আশা, ইরান পরমাণু চুক্তি মানবে। বিনিময়ে দেশটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। পরমাণু চুক্তি মানলে তেহরান আর পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করতে পারবে না। তাদের পরমাণু কেন্দ্রগুলোর ফুটেজ তারা আইএইএ-কে দেবে। তারা একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে। তাদের পরমাণু কর্মসূচি অবশ্যই শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন এবং তেহরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর আবার চুক্তিতে ফিরতে চাইছেন। এই আলোচনা হচ্ছে তার প্রথম ধাপ।

তেহরান এর আগে বারবার দাবি করেছিল, আলোচনা শুরুর আগে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। আর বাইডেনের জবাব ছিল, আগে ইরানকে পরমাণু চুক্তিতে ফিরতে হবে, চুক্তির শর্ত মানতে হবে। তেহরান জানিয়েছে, তারা এবার একটা নিশ্চয়তা চায় যে, যুক্তরাষ্ট্র আর একতরফা চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে না। সূত্র: ডিডাব্লিউ।