প্রতিশোধের অঙ্গীকার আমিরাতের

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবু ধাবি বিমানবন্দরের কাছে তেলের ট্রাক বিস্ফোরিত হয়ে তিন জন নিহতের ঘটনায় পরিস্থিতি জটিল রূপ নিচ্ছে। সোমবারের ওই বিস্ফোরণের পর আমিরাতের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর দাবি করে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীরা। অন্যদিকে এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে আমিরাতি কর্তৃপক্ষ। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

রিয়াদের নেতৃত্বাধীন যে সামরিক জোট বছরের পর বছর ধরে ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে আসছে সংযুক্ত আরব আমিরাতও সেই জোটের সদস্য। এই জোট ইয়েমেনে যে কোনও মূল্যে হুথি বিদ্রোহীদের পরাস্ত করতে চায়।

সৌদি জোটের আক্রমণের পাল্টা জবাব হিসেবে প্রায় নিয়মিতভাবেই সৌদি আরবে ড্রোন হামলা চালিয়ে থাকে হুথি। ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর দুইটি বৃহৎ তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালানো হয়। ওই হামলার পর দেশটির তেল উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। হুথি বিদ্রোহীরা এ হামলার দায় স্বীকার করলেও এ ঘটনায় তেহরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। যুক্তরাষ্ট্রের তরফে স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে হামলার নেপথ্যে ইরান জড়িত রয়েছে বলে দাবি করা হয়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তেহরান। এর আগে পরেও দফায় দফায় হুথি বিদ্রোহীদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে সৌদি আরব।

আমিরাতে এ পর্যন্ত গুটিকয়েক হামলার দায় স্বীকার করেছে হুথি। তবে আমিরাতি কর্তৃপক্ষ সেগুলোর বেশিরভাগই অস্বীকার করেছে। অবশ্য সোমবারের হামলার ঘটনাটি আমিরাতি কর্তৃপক্ষও স্বীকার করেছে। দেশটিতে এটিই হুথি বিদ্রোহীদের সবচেয়ে বড় হামলা বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

আমিরাতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ডব্লিউএএম জানিয়েছে, তেল প্রতিষ্ঠান অ্যাডনক এর গুদামের কাছে মুসাফা শিল্প এলাকায় তিনটি ট্রাক বিস্ফোরিত হলে তিন জন নিহত এবং আরও ছয় জন আহত হয়েছে। নিহতদের দুই জন ভারতীয় এবং একজন পাকিস্তানি নাগরিক। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা গেছে, মুসাফা এলাকা থেকে কালো ধোঁয়া উড়ছে। আবু ধাবি পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রাথমিক তদন্তে উভয় পাশে ছোট প্লেনের অংশ পাওয়া গেছে, যা ড্রোনের হতে পারে, এ থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।’ তবে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বড় ধরনের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

এই ঘটনার পর সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে পারে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। যদিও এর আগে তেহরান ও আবু ধাবি এমন আঞ্চলিক সংঘাত এড়াতে সম্মত হয়েছিল যাতে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর অর্থনৈতিক লক্ষ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।