সৌদি আদালতের রায়

ফিলিস্তিনি কবি ফায়াদকে ৮ বছর জেল ও ৮০০ বেত্রাঘাতের নির্দেশ

বিশ্বব্যাপী কবিতায় প্রতিবাদের ঝড়ের মুখে ফিলিস্তিনি শিল্পী ও কবি আশরাফ ফায়াদের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করেছিল সৌদি আরব। মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করলেও শুনানি শেষে নতুন রায়ে ৮ বছরের কারাদণ্ড ও ৮০০ বেত্রাগাতের নির্দেশ দিয়েছে সৌদি আদালত। বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক খবরে এ কথা বলা হয়েছে।

ফিলিস্তিনি কবি ও শিল্পী আশরাফ ফায়াদ

আশরাফ ফায়াদের আইনজীবী আবদুলরহমান আল-লাহিম এক বিবৃতিতে নতুন এ সাজার বিষয়টি জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি জানান, নতুন রায়ে ৮০০ বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৬ দফায় ৮০০ বেত্রাঘাত করা হবে। তাকে ৮ বছর কারাবাস করতে হবে। এ ছাড়া ফায়াদকে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে অনুশোচনা করতে হবে।

আল-লাহিম আরও জানান, এ রায়ের বিপক্ষে তারা আপিল করবেন কারণ ফায়াদ নির্দোষ এবং তার মুক্তি পাওয়া উচিত।

স্বধর্মত্যাগ ও ধর্ম অবমাননাসহ আরও বেশ কিছু অভিযোগে গত নভেম্বরে আশরাফ ফায়াদের শিরশ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় সৌদি আদালত। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল বার্লিন  ৪৪টি দেশে ১২২টি ইভেন্টে আশরাফের কবিতাপাঠের আয়োজন করে। এই কবিতাপাঠের মাধ্যমে তার শিরশ্ছেদের রায়ের প্রতিবাদ জানানো হয় ও যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি সৌদি আরবের প্রতি চাপ প্রয়োগ করে আশরাফের মৃত্যুদণ্ড রহিত করার আবেদন জানানো হয়। 

১৬ জানুয়ারি ৩৫ বছর বয়সী এই কবি, শিল্পী ও আর্ট কিউরেটরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা থাকলেও অবশেষে তার আপিল আমলে নেয় আদালত। তার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করে আপিল শুনানির সিদ্ধান্ত নেন বিচারকরা।  সে শুনানির প্রেক্ষিতে এ কারাদণ্ড ও বেত্রাঘাতের রায় দিল সৌদির আদালত।

আশরাফের সমর্থকরা অনেকেই দাবি করেন, অপর এক শিল্পীর সঙ্গে বৈরি সম্পর্ক ও ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরেই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, ২০০৮ সালে প্রকাশিত তার কবিতার বই ইন্সট্রাকশন উইদিন এর লেখাগুলোতে ইসলামবিরোধী বক্তব্য রয়েছে এবং ওই কবিতাগুলোর মাধ্যমে নাস্তিকতা প্রচার করছেন আশরাফ।

এ ছাড়াও নারীদের সঙ্গে ছবি তোলা ও সেই সব ছবি মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করে রাখায় সৌদি আরবের অ্যান্টি সাইবার আইনভঙ্গের অভিযোগও ওঠে আশরাফের বিরুদ্ধে। আশরাফ জানান, তিনি জেদ্দা ও ভেনিসে আর্ট গ্যালারির কিউরেটর হিসেবে কাজ করেছেন। সেখানেই তোলা হয়েছে ওই ছবিগুলো।

/এএ/