একটি ভবন, একটি শহর, ১০৬ মাইল

সায়েন্স ফিকশন মুভি তৈরি হয় ইউরোপ-আমেরিকায়, আর সেটা কিনা সত্য হতে চলেছে সৌদি আরবে। পেট্রো-ডলারের আঁচে মরুর বুকেও নেমে আসবে ফিউচারিস্টিক উদ্যান। স্বপ্নটি এখন আর রাজপ্রাসাদের কর্তাব্যক্তিদের মগজে আটকে নেই। শুরু হয়েছে কাগজে-কলমেও। আলোর মুখ দেখলে পৃথিবীর বুকে আরেক আশ্চর্য হবে ‘দ্য লাইন’।

একটা লম্বা রেখার মতো একটি ভবন বলেই এর নাম দ্য লাইন। সৌদি আরবের উত্তর-পশ্চিমের লোহিত সাগর ঘেঁষে এটি নির্মাণের পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখতে পারে খুব তাড়াতাড়ি। ভবনটির প্রস্থ ধরা হয়েছে ২০০ মিটার ও আয়তন হবে ৩৪ বর্গকিলোমিটার। পরে জানা গেলো স্বয়ং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের দফতর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে।

শহরটি ১০৬ মাইল লম্ব একক ভবনের

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে ১০৬ মাইল লম্বা একক ভবনের শহরটি নির্মাণ শেষ হলে তাতে থাকতে পারবে ৯০ লাখ মানুষ। পুরো ভবনটি চলবে পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে। থাকবে না কোনও ব্যক্তিগত গাড়ি। ভবনের এক অংশ থেকে আরেক অংশে চলবে বৈদ্যুতিক দ্রুতগতির ট্রেন।

সমালোচকরা এরইমধ্যে সরলরেখা আকৃতির ভবনটিকে প্রযুক্তিগত বিবেচনায় অসম্ভব বলে ঘোষণা করেছেন। তারা এ ভবনের প্রচারণার ভিডিও দেখে সেটাকে সৌদি আরবের ‘ডিসটোপিয়ান’ আচরণের নমুনা হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন।

দ্য লাইন মূলত আরও বড় একটি প্রকল্পের অংশ। যার নাম ‘নিওম প্রজেক্ট’।

অবশ্য তাদের কথা সত্য হলেও এতে ভুল নেই যে সৌদি আরব নিজেদের ব্র্যান্ডিং নিয়ে ইদানিং বেশ তোড়জোড় শুরু করেছে। তাদের ভিশন-২০৩০ হলো গালফ প্রতিবেশী দুবাই ও আবুধাবিকে টেক্কা দেওয়া। এ ছাড়া এ দশকের শেষে দেশটি চায় তাদের দেশে অন্তত ১০ কোটি পর্যটক আসুক।

দ্য লাইন মূলত আরও বড় একটি প্রকল্পের অংশ। যার নাম ‘নিওম প্রজেক্ট’। কাচে ভরপুর গগনচুম্বী সব ভবন নির্মাণ হবে এর অধীনে। ২০১৯ সাল থেকে কাজ শুরু হয়েছিল ‘নিওম’-এর। নকশা অনুযায়ী এটি চলবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায়। ফ্লোর পরিষ্কার করবে রোবট কর্মী, উড়বে উড়ন্ত ট্যাক্সি, আর মাথার ওপর থাকবে অতিকায় কৃত্রিম চাঁদের সারি। যা থেকে ঠিকরে পড়বে কোমল মায়াময় আলো।

কাচে ভরপুর গগনচুম্বী সব ভবন নির্মাণ হবে এর অধীনে।

আপাতত এই নিওম প্রজেক্টে সৌদি সরকার দিচ্ছে পঞ্চার হাজার কোটি ডলার। এর সঙ্গে বাদশাহ সালমানের ব্যক্তিগত তহবিলও আছে। প্রথমদিকে ২০২৫ সালে এর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরে আরও ৫ বছর বাড়ানো হয়েছে।