সেই অবরোধের পর প্রথমবারের মতো কাতার সফরে সিসি

২০১৭ সালে সৌদি জোটের কাতারবিরোধী অবরোধের পর প্রথমবারের মতো দেশটিতে সফরে গেলেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। দুই দিনের সফরের মঙ্গলবার দেশটিতে পৌঁছান তিনি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারে দুই দেশের উদ্যোগের মধ্যেই এ সফরে যান জেনারেল সিসি। কাতারি বিমানবন্দরে অবতরণের পর দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।

সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কিভাবে আরও উন্নয়ন ঘটানো যেতে পারে সে ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। কেননা, এ ধরনের সম্পর্কোন্নয়ন বিনিয়োগের সুযোগ আরও প্রসারিত করবে।

২০১৭ সালে কাতারের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করে সৌদি আরব এবং দেশটির মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও বাহরাইন। দোহার বিরুদ্ধে কথিত সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ আনে দেশগুলো। তবে ওই অভিযোগ জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করে কাতার। প্রতিবেশী দেশগুলোর অবরোধের মুখে কাতারের সমর্থনে এগিয়ে আসে তুরস্ক। বলা চলে, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান একাই সৌদি আরবের কাতারবিরোধী অবরোধ ব্যর্থ করে দেন। ওই অবরোধ প্রত্যাহারে ১৩ দফা দাবি তুলে ধরে সৌদি জোট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল আল জাজিরা টেলিভিশন বন্ধ করে দেওয়া, কাতার থেকে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি প্রত্যাহার এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা। তবে সৌদি জোটের দাবি প্রত্যাখ্যান করে উল্টো তুরস্কের দিকে আরও বেশি ঝুঁকে পড়ে কাতার।

২০২১ সালে অবরোধ তুলে নেয় সৌদি জোট। সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য অবরোধ অবরোধ আরোপকারী চার দেশের সঙ্গে একটি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করে দোহা। এরপর থেকে কাতারের সঙ্গে দেশগুলোর সম্পর্কের উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। সম্পর্ক ছিন্নের চার বছর পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কাতার সফরে যান সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

দেশের অর্থনৈতিক সংকট বিবেচনায় কাতারের সঙ্গে সৌজন্যমূলক আচরণের পথে হাঁটে মিসর। বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য সরবরাহের ঘাটতির বিষয়টি জেনারেল সিসির প্রশাসনকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

২০২২ সালের মার্চের শেষের দিকে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, কাতার দেশটিতে পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।

গত জুনে তারল্য সংকটে থাকা মিসর সফরে যান কাতারের আমির। তার সফরের এজেন্ডায় মিসরে কাতারি বিনিয়োগ এবং জ্বালানি ও কৃষি খাতে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।

প্রায় সাড়ে তিন লাখ মিসরীয় নাগরিক কাতারে কাজ করে। তারা বছরে কয়েক মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠায়।