সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে একটি জ্বালানি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে জার্মানি। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের আমিরাত সফরে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফলে রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে বিকল্প উৎস সন্ধান করছে জার্মানি। এর অংশ হিসেবে আমিরাতের সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।
শীতে জার্মানিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ার দিকে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, গ্যাস পাইপলাইন নর্ডস্ট্রিম-১ এ নতুন একটি লিকেজ দেখা দেওয়ায় সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে। আর সরবরাহ পুনরায় কবে নাগাদ চালু হবে তার কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়াও তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
পশ্চিমা দেশগুলোর দাবি, জ্বালানি সংকট নিয়ে খেলায় মেতেছে মস্কো। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে জ্বালানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে।
এমন পরিস্থিতিতে জ্বালানির জন্য রাশিয়ার বিকল্প উৎসের সন্ধানে মধ্যপ্রাচ্য করছেন জার্মান চ্যান্সেলর। উপসাগরীয় অঞ্চলে দুই দিনের সফরের অংশ হিসেবে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার সফর করেন তিনি।
রবিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান ও জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস জ্বালানি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। চুক্তির আওতায় দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি নিরাপত্তা ও শিল্পে প্রবৃদ্ধি জোরদারের কথা বলা হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, জার্মানির আরডব্লিউই কোম্পানির কাছে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের চুক্তি করেছে আবুধাবি ন্যাশনাল ওয়েল কোম্পানি।
চুক্তি অনুসারে, ২০২২ সালের শেষ দিকে আমিরাতের কোম্পানিটি এলএনজির প্রথম চালান সরবরাহ করবে। পরীক্ষামূলক কার্যক্রমে প্রাকৃতিক গ্যাস পৌঁছাবে জার্মানির ব্রুন্সবুয়েত্তেল বন্দরে।
জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে বৈঠক শেষে নাহিয়ান টুইটারে জানান, তারা জ্বালানি নিরাপত্তা, কার্বন নিঃসরণ কমানো ও জলবায়ু পদক্ষেপসহ সহযোগিতার নানা ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন।
দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিকে ‘যুগান্তকারী নতুন চুক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন আমিরাতের শিল্পমন্ত্রী সুলতান আহমেদ আল জাবের।
জার্মান চ্যান্সেলর এই ‘জ্বালানি নিরাপত্তা’ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন।