ইরানের বিক্ষোভ গড়ালো তৃতীয় সপ্তাহে, নিহত বেড়ে ৯২

ইরানে পুলিশ হেফাজতে কুর্দি নারী মাহশা আমিনি নিহতের ঘটনায় চলমান বিক্ষোভ টানা তৃতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে। রবিবার নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী হাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ জন। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এখবর জানিয়েছে।

ইরানের কঠোর পোশাকবিধি অমান্য করায় গ্রেফতার করা হয় মাহশা আমিনিকে। গ্রেফতারের পর ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর থেকে দেশটির পোশাকবিধির বিরোধিতা ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ইরানে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ। চলমান প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের জ্বালানো আগুনে অনেক নারী তাদের হিজাব পোড়াচ্ছেন, গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সামনে চুল খুলে নাচছেন, যা শাসকদের প্রতি প্রকাশ্য অবাধ্যতার সুনির্দিষ্ট চিত্র হাজির করছে। প্রতিদিনই বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে।

আইএইচআর বলছে, সরকারি আইনশৃঙ্খলা-বাহিনীর হাতে বিক্ষোভকারীদের এভাবে নিহত হওয়ার ঘটনা মানবতাবিরোধী অপরাধের সমতুল্য।

আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবোক।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেছেন, তার দেশে চলমান বিক্ষোভের পেছনে পশ্চিমের দেশগুলোর হাত রয়েছে। দেশটিতে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে।

দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশের জাহেদান শহরে গত এক সপ্তাহ ধরা চলা বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৪১জন নিহত হয়েছে বলে দাবি মানবাধিকার সংস্থাটির।

সংস্থাটির দাবি, সেখানকার একজন পুলিশ কর্মকর্তা এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

তবে সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশের এই বিক্ষোভ মাহসা আমিনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কিনা তা স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।

সিস্তান-বালুচিস্তানে নিহতের সংখ্যা এবং মাহশা আমিনি হত্যাকাণ্ড মিলিয়ে গত ১৫ দিনে দেশটিতে ১৩৩ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা বালুচ অ্যাকটিভিস্ট ক্যাম্পেইন।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং আর যেন এমন ঘটনা না ঘটে তা সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আইএইচআর।