বিক্ষোভের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি দেশটিতে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান বিক্ষোভের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন দেশ দুটি ইরানের ‘উন্নতি’ প্রতিহত করতে চাইছে। সোমবার তিনি কয়েক বছরের মধ্যে বৃহত্তম এই বিক্ষোভকে ‘দাঙ্গা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানে পুলিশ হেফাজতে কুর্দি নারী মাহশা আমিনি নিহতের ঘটনায় দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ হচ্ছে। কঠোর পোশাকবিধি অমান্য করায় আমিনিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। হেফাজতে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই ইরানে নারীদের কঠোর পোশাকবিধিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। রবিবার নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী হাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ জন।

৮৩ বছর বয়সী আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, আমি স্পষ্টভাবে বলছি এই দাঙ্গা ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও দখলদার জায়নবাদী শাসকরা (ইসরায়েল) এবং তাদের কাছ থেকে যারা অর্থ পেয়েছে। বিদেশে থাকা কয়েকজন বিশ্বাসঘাতক ইরানিও তাদের সহযোগিতা করছে।

তিনি বলেন, একটি দুর্ঘটনায় এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। যা আমাদের জন্যও বেদনাদায়ক। কিন্তু তদন্তের আগেই এমন প্রতিক্রিয়া… যখন অনেকে রাস্তায় নেমে পরিস্থিতি অনিরাপদ করছে, কোরআন পোড়াচ্ছে, নারীরা মাথা থেকে হিজাব খুলছে এবং মসজিদ ও মানুষের গাড়ি পোড়াচ্ছে, তখন তা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া না।

বক্তব্যে খামেনি চলমান বিক্ষোভকে ইরানকে অস্থিতিশীল করতে বিদেশি উদ্যোগের অংশ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। তিনি দাবি করেন, আমিনির মৃত্যু না হলেও বিদেশিরা ‘অজুহাত’ খুঁজে দেশকে অস্থিতিশীল করতে তুলতো।

খামেনি আরও দাবি করেছেন, এই বিক্ষোভ দেশটির অগ্রগতি ঠেকানোর চেষ্টা। ২০১৮ সাল থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরও ইরান যে অগ্রগতি অর্জন করছে সেটিকে থামিয়ে দেওয়াই এই বিক্ষোভের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, তারা মনে করছে আমরা পূর্ণাঙ্গ শক্তিধর দেশ হতে যাচ্ছি এবং তারা এটি মেনে নিতে পারছে না।

চলমান বিক্ষোভে ইরানের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ভূমিকায় আরও নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর ইরান ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর জারি করা ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করেছে।