ইরানে বিক্ষোভ দমনে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ মোতায়েন

ইরানে চলমান বিক্ষোভ দমনে বেশ কয়েকটি শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ পুলিশ মোতায়েন করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে। নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে কুর্দি নারী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে এই বিক্ষোভ চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সকে জানান, উমিয়া, তাবরিজ, রাশত ও রাজধানী তেহরানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঘিরে দাঙ্গা পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল পরিণত হয়েছে এসব শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

তেহরানের এক শিক্ষার্থী জানান, তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে নিরাপত্তাবাহিনীর অনেক সদস্য অবস্থান করছে। আমি ক্যাম্পাস ছাড়তে ভয় পাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের গ্রেফতারের জন্য অনেক পুলিশ ভ্যান বাইরে অপেক্ষা করছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে কয়েক হাজারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেকে আহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়েছে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী মিলিশিয়া দল বাসিজ। এখন পর্যন্ত বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ জনে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্য নিহত হয়েছে। চলমান বিক্ষোভের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা মাথার হিজাব খুলে ‘খামেনি নিপাত যাক’ স্লোগান দিচ্ছেন।

রয়টার্সের পক্ষ থেকে ভিডিওটি সত্যতা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী কুর্দি নারী মাহশা আমিনি (২২) ইরানের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে দেশটির কঠোর পোশাকবিধি লঙ্ঘনের দায়ে নৈতিকতা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় তিনি অজ্ঞান হয়ে কোমায় চলে গিয়েছিলেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটিতে কঠোর পোশাকবিধি বাতিল এবং নারীদের অবাধ চলাচলের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়।

বিক্ষোভের মধ্যে ১৭ বছরের আরেক কিশোরী নিকা শাকারামির মৃত্যুতে প্রতিবাদ জোরদার হয়েছে। টুইটারে অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে তেহরানে নিহত হয়েছেন শাকারামি।

কর্মকর্তারা বুধবার জানিয়েছে, শাকারামির মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে বিক্ষোভের কোনও সম্পর্ক নেই। ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। কোনও গুলির আঘাতের চিহ্ন ছিল না তার মরদেহে।