বন্ধ ২ সীমান্ত দিয়ে ত্রাণ পৌঁছালো সিরিয়ায়

তুরস্ক-সিরিয়ার ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ। সব কিছু হারিয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। এই মুহূর্তে তাই ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি ত্রাণ সহায়তাকে গুরুত্ব দিচ্ছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা।

৬ ফেব্রুয়ারি ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেবল সিরিয়াতেই অন্তত ৯০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গৃহযুদ্ধে জর্জরিত সিরিয়ার নাগরিকদের এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠা শক্ত চ্যালেঞ্জ হবে নিশ্চিতভাবেই। তাই শুরুতেই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত সিরীয়দের সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি চারশো মিলিয়ন ডলার মূল্যের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া ঘোষণা দিয়েছে।

আর এই সহায়তা পাঠাতে ২০২০ সাল থেকে বন্ধ উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার বাব-আল সালাম ও বাব-আল হাওয়া সীমান্ত পুনরায় চালু হয়েছে। এই সীমান্ত দুটি সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণাধীন। ২০২০ সালের পর এই প্রথম সীমান্ত দুটি ব্যবহার করছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘৬ ফেব্রুয়ারির দক্ষিণ তুরস্ক ও উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় ভূমিকম্প সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ একটি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য যথাসময়ে প্রয়োজনীয়  ত্রাণ পাঠানোও সম্ভব হয়নি।’

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অন্যতম মিত্র রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার চাপেই এতদিন পারাপার পথ দুটি দিয়ে কোনও সহায়তা দিতে পারেনি জাতিসংঘ। যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ায় যে কোনও সহায়তা সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল দিয়ে পাঠাতে হতো এতদিন।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুমোদন পাওয়ার পরদিনই বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল দুটি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ পাঠায় জাতিসংঘ। বাব-আল সালাম সীমান্ত দিয়ে জাতিসংঘের ১১টি ট্রাক তুরস্ক হয়ে মানবিক সহায়তা নিয়ে সিরিয়ায় পৌঁছায়।

বাব-আল সালাম ক্রসিং ব্যবহার করে ১১টি আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মানবিক সহায়তা পাঠানোর কথাও জানায় জাতিসংঘ। আরও ২৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থা বাব-আল হাওয়া সীমান্ত দিয়ে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় ত্রাণ পাঠিয়েছে।

আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি এক বিবৃতিতে জানায়, নতুন সীমান্ত পারাপার দ্রুত চালু না করায় ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব জানান, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৫০ লাখ সিরীয় অধিবাসীর তিন মাসের প্রয়োজনীয় আশ্রয়, খাদ্য, সুরক্ষা ও চিকিৎসা সেবা দিতে ৩৯৭ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে জাতিসংঘ। কেবল ত্রাণই নয়, ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

সূত্র: আল-জাজিরা