কেন যুক্তরাষ্ট্রগামী তেলের ট্যাংকার জব্দ করলো ইরান?

ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র নতুন বিরোধে জড়িয়েছে। ওমান উপসাগরে ট্যাংকার জব্দের ঘটনায় পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছে দুই দেশ।

তুরস্ক পরিচালিত চীনা মালিকানাধীন ট্যাংকারটি হরমুজ প্রণালি হয়ে ওমান উপসাগরে প্রবেশ করেছিল। মার্কিন জ্বালানি সংস্থা-শেভরন কর্পোরেশনের জন্য কুয়েতি অপরিশোধিত তেল বহন করে টেক্সাসের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল ট্যাংকারটি।

ইরান বলছে, ট্যাংকারটিকে আটক করার কয়েক ঘণ্টা আগে একটি অজ্ঞাত ইরানি জাহাজের সঙ্গে এটির সংঘর্ষ হয়েছিল। এতে বেশ কয়েকজন ক্রু জাহাজ থেকে পড়ে নিখোঁজ হন। অনেকেই আহত হন। তারপর রেডিও সিগন্যাল না মেনেই ট্যাংকারটি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এর আট ঘণ্টা পর আদালতের আদেশের ভিত্তিতে এটিকে আটক করা হয়।

ইরানের নৌবাহিনীর অপারেশনের ডেপুটি মোস্তফা তাজোদিনি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা বারবার জাহাজটিকে থামানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছিলাম; যাতে আমরা আরও বিস্তৃত তদন্ত করতে পারি। কিন্তু কোনও সহযোগিতা করা হয়নি।’

অন্যদিকে অ্যাডভান্টেজ ট্যাংকারস নামে তুর্কি ফার্মটি বলছে, একই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে তারাও। তবে ট্যাংকারের ক্রু সদস্যরা যাদের মধ্যে ২৪ জনই ভারতীয়, তাদের কোনও বিপদ হয়নি।  

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহর বলছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে ইরান। অবিলম্বে ট্যাংকারটিকে ছেড়ে দিতে তেহরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

বিবৃতিতে তারা বলেছে, ইরানের জাহাজের ক্রমাগত হয়রানি এবং আঞ্চলিক জলসীমায় নৌ চলাচলের অধিকারে হস্তক্ষেপ সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য হুমকি। গত দুই বছরের ইরান অন্তত পঞ্চম বাণিজ্যিক জাহাজ আটক করেছে।

 

আঘাতের বদলে আঘাত

রয়টার্স নিউজ এজেন্সি শুক্রবার জানিয়েছে, তেহরানের ওপর একতরফা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের তেলের ট্যাংকার বাজেয়াপ্ত করা করেছে তেহরান।

এই ধরনের পদক্ষেপের নজির আগেও দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র গত বছর গ্রিসের কাছে ইরানি তেলের একটি কার্গো বাজেয়াপ্ত করেছিল। জবাবে তেহরান দুটি গ্রিক ট্যাংকার জব্দ করে কয়েক মাস আটকে রাখে। গ্রিসের সর্বোচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপে অবশেষে বিষয়টির সুরাহা হয়। 

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে একতরফাভাবে সরে দাঁড়ান। তারপর ইরানের ওপর তার কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। এই নিষেধজ্ঞার আওয়ার আছে তেহরানের তেল বিক্রি। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে ইরান তার তেল বিক্রি অব্যাহত রেখেছে।

সূত্র: আল জাজিরা